ছবি সংগৃহীত।
আরোগ্য সেতু অ্যাপ নিয়ে তথ্য সবই রয়েছে। কিন্তু তথ্য দেওয়া হয়নি।এই অবস্থান নিয়ে কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক তাদের অফিসারদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।লকডাউনের পরে প্রায় সব ক্ষেত্রেই মোদী সরকার আরোগ সেতু অ্যাপ বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু কারা সেই আরোগ্য সেতু অ্যাপ তৈরি করে, কী ভাবে তা তৈরি হল, তার ফাইল কোথায়, তথ্য চুরির বিষয়ে কী সতর্কতা নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেয়নি সরকার।
মুখ্য তথ্য কমিশনের তোপ ও বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে আজ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রকের অফিসারদের দিক থেকেই গাফিলতি হয়েছে। তাঁরা তথ্যের অধিকার আইনে প্রশ্ন করা হলেও তার সঠিক উত্তর দেননি। এর জন্য দায়ী অফিসারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকার এখন যা-ই বলুক, সমাজকর্মী তেহসিন পুণাওয়ালা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডেকে চিঠি লিখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। পুণাওয়ালার আর্জি, আরোগ্য সেতু অ্যাপের মাধ্যমে যে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে তা বিস্তারিত জানিয়ে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। এই অ্যাপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্য মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিক আদালত।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক অফিসারদের উপরে দায় চাপালেও সরকারি সূত্রের বক্তব্য, আরোগ্য সেতু অ্যাপ তৈরিতে বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করেছিলেন। এমনটা হতেই পারে, কাগজে-কলমে তার সব তথ্য রাখা হয়নি। সেই কারণেই তথ্যের অধিকার আইনে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা তথ্য জানাতে পারেননি। অন্তত তিনটি সুপরিচিত তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবা সংস্থার কর্মীরা এই অ্যাপ তৈরিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন। ওই সংস্থার কর্তারাও বিভিন্ন সময়ে তা জানিয়েছেন। হতে পারে, দ্রুত কাজ শেষ করার চাপে কাগজে-কলমে সমস্ত প্রক্রিয়া মেনে তা হয়নি। নীতি আয়োগের কর্তারাও এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু কী ভাবে গোটা কাজ হয়েছে, মুখ্য তথ্য কমিশনের সামনে সরকার তথ্য পেশ করলে তা জানা যাবে।
বিরোধীদের বক্তব্য, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য বিলের খসড়া তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারই সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বে কমিশন তৈরি করেছিল। তিনিই বলেছিলেন, আরোগ্য সেতু অ্যাপ বাধ্যতামূলক করা অনুচিত। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল বলেন, ‘‘সরকারকে জবাব দিতেই হবে যে এই অ্যাপের লক্ষ্য কী ছিল? মানুষের প্রাণ বাঁচানো না কি নজরদারি? বিজেপির ট্র্যাকরেকর্ড মোটেই ভাল নয়। বিজেপির নাম বদলে ভ্রষ্ট জাসুস পার্টি রাখা উচিত।’’