—প্রতীকী চিত্র।
পান থেকে চুন খসলেই নাবালিকা পরিচারিকাকে মার। কখনও সেনা অফিসার মারধর করছেন তাকে, কখনও তাঁর স্ত্রী। এমনকি, রাতদিন হাড়ভাঙা খাটুনির পর দু’মুঠো খাবারও দেওয়া হত না পরিচারিকাকে। ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট কুড়িয়ে খেতে হত তাকে। এমনই সব অভিযোগে অসমে এক সেনা অফিসার এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গুয়াহাটিতে কর্মরত এক সেনা অফিসার এবং তাঁর স্ত্রীকে বাড়ির কাজে সাহায্য করত ১৬ বছরের এক নাবালিকা। সম্প্রতি মারাত্মক ভাবে জখম অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নাবালিকার দাঁত ভেঙে গিয়েছিল। সারা গায়ে ছিল পোড়ার দাগ। চিকিৎসকেরা পরীক্ষার পর জানান, মেয়েটির নাক ভাঙা ছিল, জিভেও গভীর ক্ষত ছিল। কী ভাবে এতগুলি জায়গায় এ রকম সব ক্ষতের সৃষ্টি হল? পুলিশের প্রশ্নের জবাবে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানায় ওই মেয়েটি। সে দাবি করে, যে বাড়িতে কাজ করত, তার মালিক এবং মালকিনের কাজ এসব। মেয়েটি অভিযোগ করে, ওই বাড়িতে কাজ করার সময় তাকে নগ্ন হয়ে থাকতে হত। যখন তখন তাকে মারধর করা হত। কখনও সেনা অফিসার মারধর করতেন, কখনও তাঁর স্ত্রী। কখনও আবার দু’জনে মিলে তাকে হেনস্থা করতেন।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, গত ছ’মাস ধরে মেয়েটিকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে। কাজের পর কিছু খেতে চাইলে উচ্ছিষ্ট খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। নির্যাতিতার অভিযোগ, তাকে এক এক দিন বেঁধে মারধর করা হত। যত ক্ষণ পর্যন্ত রক্তাক্ত হচ্ছে, তত ক্ষণ মারধর চলেছে। এমনকি, মারের চোটে যখন রক্ত বেরোত, তখন সেই ক্ষত স্থান থেকে রক্ত চেটে খেতে হত তাকে।
যদিও অভিযুক্ত দম্পতি পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, ছাদের সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে আহত হয়েছে নাবালিকা। তাঁরাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন।
ইতিমধ্যে পুলিশ ওই সেনা অফিসার এবং তাঁর স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এ ছাড়া এসসি, এসটি আইন-সহ আরও বেশ কয়েক’টি আইনে মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর মেজর পদে কর্মরত। কাজের সূত্রে যেখানেই সেনা অফিসার বদলি হতেন, সেখানে পরিচারিকাকেও নিয়ে যেতেন।