বিজেপি বিধায়ক লালন পাসওয়ান। ফাইল চিত্র।
হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী দেবী লক্ষ্মী ধন ও ঐশ্বর্যের দেবী। তাঁকে আরাধনা করলে গৃহস্থের ধনভাগ্য প্রসারিত হয়, এমনটাই বিশ্বাস করা হয়ে থাকে। এ বার সংশয়ী হয়ে সেই বিশ্বাসের মূলেই ঘা দিলেন বিজেপি বিধায়ক। বিহারের পীরপৈন্তি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক লালন পাসওয়ান কিছু দিন আগেই দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে ধনৈশ্বর্যের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন, “শুধু লক্ষ্মীপুজো করেই যদি বড়লোক হওয়া যেত, তবে কি মুসলিমদের মধ্যে এত এত লাখপতি, কোটিপতি পাওয়া যেত?”
মুসলিমদের মধ্যে লাখপতি এবং কোটিপতি পাওয়ার প্রসঙ্গে লালনের যুক্তি অকাট্য, মানছেন বিহারের ভাগলপুর জেলার মিশ্র ধর্মের মানুষজন। কিন্তু দেবী লক্ষ্মী ভাঁড়ার উপুড় করে দান করেন না, এ কথা মানতে নারাজ ধর্মনির্বিশেষে গৃহস্থ মানুষজন। বিধায়কের কেন্দ্রের মানুষজনই জানাচ্ছেন, এটা একেবারেই লালনের নিজস্ব মতামত।
লালন অবশ্য শুধু লক্ষ্মীতেই থেমে থাকেননি। তিনি সরস্বতী প্রসঙ্গেও গিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, “সরস্বতী যদি বিদ্যার দেবী হন, তবে মুসলমানরা কী ভাবে তাঁর আরাধনা না করেই উচ্চশিক্ষিত হচ্ছেন? কী করে আইপিএস, আইএএস হচ্ছেন?” এর পরই তাঁকে তাঁর বক্তব্যের মূল পর্যায়ে ঢুকতে দেখা যায়। তিনি বলেন, “আপনি ঈশ্বরকে জীবন্ত সত্তা মনে করতে পারেন, আবার পাথরের মূর্তিও মনে করতে পারেন। সবটাই নির্ভর করছে আপনার বিশ্বাসের উপর।” একই সঙ্গে সকলের উদ্দেশে লালনের উপদেশ, “আমাদের সকলের উচিত বিজ্ঞানসম্মত যুক্তির দ্বারা কোনও কিছু সিদ্ধান্তে আসা।” এমন অভ্যাস করতে পারলে মানুষের বোধবুদ্ধি বাড়বে বলেও দাবি করেছেন তিনি। লালনের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই বিহারের শেরমারি বাজারে তাঁর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায় জনতা। বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। তার পরেও নিজের বক্তব্যে অনড় লালন।