Goa

Goa: ‘যে কোনও পর্যটনই স্বাগত’, গোয়ায় ‘রাজনৈতিক পর্যটন’ নিয়ে এ বার কটাক্ষ বিজেপি-রও

বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রীর ব্যঙ্গের নিশানার এক প্রান্তে তৃণমূল বা আপ-এর মতো গোয়ার বাইরের দল। অন্য দিকে গত বিধানসভায় তাদের প্রতিপক্ষ কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পানজিম শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৫০
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত। ফাইল চিত্র।

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বিরোধীদের কটাক্ষ করে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত বলেছিলেন, “আগামী কয়েক মাস গোয়ায় রাজনৈতিক পর্যটন বাড়বে! আশা করব রাজ্যের পর্যটন শিল্প তাতে উপকৃত হবে। সব রকম পর্যটনকেই স্বাগত জানাই।”

Advertisement

বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রীর ব্যঙ্গের নিশানার এক প্রান্তে তৃণমূল বা আপ-এর মতো গোয়ার বাইরের দল। অন্য দিকে গত বিধানসভায় (২০১৭) তাদের ঘাম ছুটিয়ে দেওয়া প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। কিন্তু ঘটনা হল, গোয়ার ভোটের জন্য যেমন মরিয়া কংগ্রেস, একই ভাবে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারাও কম যাচ্ছেন না এই ‘রাজনৈতিক পর্যটনে’। এখানকার রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, তার প্রধান কারণ নেতা-বিধায়কদের উপর নেতৃত্বের আস্থার অভাব। এখানকার রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ‘ডিগবাজি’ খুবই জনপ্রিয় যে!

রাজনৈতিক মহল বলছে, এখানকার নির্বাচনী ক্ষেত্রগুলি যেহেতু ছোট, খুব কম আসন (হাজার পাঁচেক) ভোটই ত্রিকোণ লড়াইয়ে প্রার্থীকে জিতিয়ে দিতে সক্ষম। ‘দল বদলুর’ ঐতিহ্যও রয়েছে। গত ভোটে কংগ্রেসের ১৭টি আসন এখন চারে এসে ঠেকেছে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের দলত্যাগী ১০ জন বিধায়কদের (২০১৯) মন্ত্রিত্ব ‘উপহার’ দিতে গিয়ে বিজেপি শরিক দলের (গোয়া ফরোয়ার্ড পার্টি) তিন জন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে সরিয়ে ছিল। এখন বিজেপি-র উপর ক্ষুব্ধ গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি-কে তৃণমূল কংগ্রেস যেমন কাছে টানতে চাইছে, কংগ্রেসও তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে বলে খবর। আর বিজেপি চাইছে দুর্গ অক্ষত রাখতে।

Advertisement

গত এক মাসে দু’বার পানজিমে সফর করলেন কংগ্রেসের প্রবীণ এবং অন্যতম শীর্ষ নেতা পি চিদম্বরম। পক্ষকালের মধ্যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী জি কিষেন রেড্ডি, রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোশ, মহারাষ্ট্রের বিরোধী নেতা দেবেন্দ্র ফড়ণবীস গোয়া যাওয়া-আসা করছেন ভোটের কৌশল রচনা করতে।

মাত্র ১৪.৮৫ লাখ জনসংখ্যার এই গোয়া দখলের জন্য কেন কংগ্রেস এবং বিজেপি-র মরিয়া চেষ্টা? গোয়ার কূটনৈতিক শিবির বলছে, গোয়া এমনই একটি ‘শো পিস’ যা বিভিন্ন কারণে ধরে রাখতে চায় উভয়েই। প্রথমত, তার ভৌগোলিক অবস্থান। গোয়ার সীমান্তে মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটক—এই দুই রাজ্যের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। আবার গোয়ার আবাসন ক্ষেত্র, খনি শিল্প এবং সর্বোপরি পর্যটনের রয়েছে কর্পোরেট বিনিয়োগ টানার ক্ষমতা।

বিজেপি-র গোয়া প্রদেশ সভাপতি সদানন্দ শেঠ জানাচ্ছেন, দেবেন্দ্র গোয়ায় এসে দফায় দফায় বিজেপি বিধায়ক, নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। কালাংগুটের বিজেপি বিধায়ক এবং গোয়া সরকারের জাহাজমন্ত্রী মাইকেল লোবো তাঁর দল এবং সরকারের উপর ক্ষুদ্ধ। কংগ্রেস এবং আপ-এ যোগদানের প্রস্তাব রয়েছে তাঁর কাছে। সদানন্দ জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলছেন দেবেন্দ্র।। দেবেন্দ্রকে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের বিধায়ক এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রতাপসিংহ রানের সঙ্গে নৈশভোজ করতে। এই নৈশভোজ-রাজনীতিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে গোয়ার শিবির। কারণ, প্রতাপ সিংহের পুত্র বিশ্বজিৎ ২০১৭ সালে ভোটের পর কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেন।

গোয়া দখলে মরিয়া কংগ্রেসও। আপ এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে গোয়া রাজনীতিতে ‘প্রান্তিক’ হিসেবে অভিহিত করা চিদম্বরম প্রাথমিক ভাবে প্রত্যেকটি বিধানসভা ক্ষেত্রের একটি করে ব্লক (মোট ৪০টি) নতুন করে সাজাচ্ছেন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে। রাজ্য কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট গিরিশ চোডাণকর বলছেন, “এই প্রথম গোয়ায় ভোটের আগে জাতীয় স্তরের শীর্ষ কোনও নেতা রাজ্যে এসে ব্লককর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। দল এর ফলে তেতে উঠেছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement