পটনার বৈঠকের তাল কাটল অর্ডিনান্স নিয়ে কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে বাদানুবাদে। ছবি— পিটিআই।
পটনার বৈঠকের তাল কাটল আম আদমি পার্টির (আপ) হুঙ্কারে। যে সময় বিরোধী দলের নেতারা পটনায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে ঐক্যবদ্ধ ছবি তুলে ধরছেন, সেই সময়ই কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ শানাল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল। আপ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আগামিদিনে এমন কোনও বিরোধী বৈঠকে তাদের পক্ষে থাকা সম্ভব না, যেখানে কংগ্রেস আছে। শর্ত একটাই, কংগ্রেসকে কেন্দ্রীয় অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করতে হবে।
দিল্লিতে আমলা নিয়ন্ত্রণের ভার থাকবে কার হাতে? এ নিয়ে কেন্দ্র অর্ডিন্যান্স এনেছে কেন্দ্র। তাকেই পাকাপোক্ত করতে সংসদের দুই কক্ষেও পেশ করা হবে। সে দিকে তাকিয়ে গোটা দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট করার দৌত্য চালাচ্ছেন কেজরীওয়াল। এই লক্ষ্যে কলকাতায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনও আদায় করে ফেলেছেন কেজরীওয়াল। কেজরীর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন দেশের অন্যান্য অবিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রীরাও। ব্যতিক্রম কংগ্রেস। দিল্লি এবং পঞ্জাবের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যাদের লড়াই সরাসরি আপের সঙ্গে। এই প্রেক্ষিতে আপ কংগ্রেসের সমর্থন চাইলেও মল্লিকার্জুন খড়্গের দল এখনও সেই বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে।
সূত্রের খবর, পটনার বৈঠকেও এ নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি খড়্গের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় কেজরীওয়ালের। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন না কেজরীওয়ালরা। পটনার বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পরেই কংগ্রেসকে আক্রমণ করে কড়া ভাষায় বিবৃতি জারি করে আপ।
বিবৃতিতে আপ লিখেছে, ‘‘এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কংগ্রেসের দ্বিধা এবং দলের একজন খেলোয়াড় না হতে চাওয়ার মনোভাবের জেরে আপের পক্ষে এমন কোনও জোটের অংশ হওয়া খুব কঠিন যেখানে কংগ্রেস আছে। যত দিন না কংগ্রেস প্রকাশ্যে কালো অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতা করছে এবং কংগ্রেসের ৩১ জন রাজ্যসভার সাংসদই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছেন, আপের পক্ষে ভবিষ্যতে কোনও এমন সমমনোভাবাপন্ন জোটের বৈঠকে অংশ নেওয়া কঠিন।’’
ঘটনাচক্রে, পটনার বৈঠকে শুক্রবারই স্থির হয়েছে পরবর্তী বৈঠক হবে শিমলায়। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে আপের বিবৃতির পর সেই বৈঠকে কেজরীওয়ালদের যোগদান নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
যদিও এ বিষয়ে কংগ্রেসের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন সভাপতি খড়্গে। পটনায় পৌঁছেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘সমর্থন বা বিরোধিতা— কোনওটাই বাইরে হয় না, হয় সংসদের ভিতরে। সংসদ শুরুর আগে সবকটি দলই স্থির করে কোন কোন বিষয়ে একসঙ্গে লড়াই করা হবে। তাঁরা সেটা জানেন। এমনকি তাঁদের নেতারা আমাদের সর্বদলীয় বৈঠকেও আসেন।’’ পাশাপাশি কংগ্রেস আরও জানিয়ে দিয়েছে, সংসদে কী পদক্ষেপ করা হবে, তা পটনার বৈঠকের আলোচ্য নয়।
কংগ্রেস বিষয়টি সংসদের অধিবেশন শুরুর জন্য ঝুলিয়ে রাখতে চাইলেও তাতে সম্মতি নেই আপের। তাই পটনার বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিয়মের পর কালক্ষেপ না করে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বিবৃতিও জারি করে দিল কেজরীওয়ালের দল। স্বভাবতই, পটনার বৈঠকে বিরোধী ঐক্য নিয়েও উঠে গেল প্রশ্ন।