প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা ফাইল চিত্র।
ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে পুলিশ কর্তাদের ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক নিয়ে এ বারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন খোদ দেশের প্রধান বিচারপতি।
সরকার-পুলিশ ঘনিষ্ঠতা এবং তার জেরে বিরোধীদের নানা ভাবে হেনস্থার অভিযোগ এ দেশে নতুন নয়। কিন্তু ক্রমে সেটাই একটা রীতি হয়ে উঠছে বলে একাধিক বার সরব হয়েছেন দেশের নানা প্রান্তের বিরোধী দলগুলির নেতারা। অভিযোগ উঠেছে, সরকারকে ‘তুষ্ট’ করতে নানা ভাবে বিরোধী নেতাদের মামলায় জড়িয়ে ফেলে হেনস্থা করা হচ্ছে। অবিকল সেই উদ্বেগই এ বারে শোনা গেল প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার মুখে। তাঁর কথায়, ‘‘যে সব পুলিশ অফিসারেরা ক্ষমতাসীন সরকারের সুনজরে থাকতে চান, তাঁরা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন এবং বিরোধীদের হেনস্থা করেন।’’ পুলিশই এই প্রবণতার জন্য দায়ী বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, পুলিশ অফিসারদের আইনের নিয়ম মেনেই চলতে হবে।
মাত্র দু’দিন আগেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রাণের করা ‘কুমন্তব্য’র অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা মহারাষ্ট্র। রাণেকে গ্রেফতারের দাবি-পাল্টা দাবিকে গিরে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে শিবসেনা কর্মীদের সংঘর্ষ বাধে। গ্রেফতার করা হয় একাধিক বিজেপি কর্মীকে। বিজেপি অভিযোগ তোলে, রাজ্য পুলিশ বেছে বেছে তাদের কর্মীদের হেনস্থা করছে। পাল্টা শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের তরফে বলা হয়, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার তাদের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে রাজ্যের নেতাদের হেনস্থা করছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারি তদন্ত সংস্থাগুলির সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এই চাপানউতোরের মধ্যেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
প্রধান বিচারপতির এই মন্তব্যের প্রেক্ষিত অবশ্য ভিন্ন। ছত্তীসগঢ়ের গুরজিন্দর পাল সিংহ নামে এক আইপিএস অফিসারকে বরখাস্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করেছে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার। ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগও রয়েছে। গুরজিন্দরের অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে পূর্বতন বিজেপি সরকারের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে হেনস্তা করছে বর্তমান কংগ্রেস সরকার। সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় গুরজিন্দরকে এখনই গ্রেফতার না করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকারকে।