ফাইল চিত্র।
এক সপ্তাহ আগেই তালিবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র সুহেল শাহিন বড় মুখ করে বলেছিলেন, ‘‘আফগানিস্তানের মাটিকে অন্য কোনও দেশ-বিরোধী সন্ত্রাসের আস্তানা করতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ কিন্তু সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের রিপোর্ট বলছে, সেই দাবি ভিত্তিহীন। গত অগস্টে তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ভারত-বিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠীর (জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবা) ১১টি নতুন শিবির গড়ে উঠেছে। তারা সরাসরি তালিবানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, বলা হয়েছে রিপোর্টে।
জানা যাচ্ছে, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী নানগরহর এবং কুনার প্রদেশে এই দুই জঙ্গি সংগঠনের পুনরাবির্ভাব ঘটেছে বছর পাঁচেক পরে। সূত্রের খবর, আফগানিস্তানে জইশের নতুন নেতার নাম কারি রামাজান। তার নেতৃত্বে মোট ৮টি সশস্ত্র শিবির চলছে আফগানিস্তানে। পাশাপাশি সে দেশে লস্করের তাঁবুগুলির নেতৃত্ব দিচ্ছে মৌলবি ইউসুফ। কয়েক মাস আগে এক লস্কর নেতা মৌলবি আসাদুল্লা আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নুর জলিলের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বলে রিপোর্টে প্রকাশ। আরও বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানে নিরাপদ আস্তানা পাওয়ার বিনিময়ে তালিবানকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ এবং পুঁজির জোগানও দিচ্ছে লস্করের মতো জঙ্গি গোষ্ঠী।
রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি এই রিপোর্ট নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলির কাছে বিশদে তুলে ধরছেন। ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘‘আল কায়দা গোষ্ঠীর সঙ্গে এখনও সব চেয়ে ঘনিষ্ঠ সংযোগ রেখে চলে পাকিস্তানের মদতপ্রাপ্ত হক্কানি গোষ্ঠী। …এই গোষ্ঠী আল কায়দার স্থানীয় ভিত তৈরি করতে এবং নিরাপদ স্বর্গরাজ্য তৈরিতে সবচেয়ে বিশ্বস্ত সঙ্গী।’’ নয়াদিল্লি এ কথাও নিরাপত্তা পরিষদকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, সম্প্রতি তালিবান কর্তা সুহেল শাহিন, বিশ্বকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করেছেন। সুহেল আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসমুক্ত ঘোষণা করে বলেছিলেন, “আমরা চাই আফগানিস্তান বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠুক। সেই জন্য সকলের সহযোগিতা চাই। তাতে সাড়া দেওয়ার দায় অন্যদের।” কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের এই রিপোর্ট আসার পরে মনে করা হচ্ছে, তালিবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে জটিলতা আরও বাড়বে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।