অঙ্কিতা ভাণ্ডারী।
তিনি চেয়েছিলেন অন্তত এক বার যেন মেয়েকে দেখতে দেওয়া হয়। কিন্তু সে আশাপূরণ হয়নি উত্তরাখণ্ডের ‘বনত্র’ রিসর্টের নিহত রিসেপশনিস্টের মায়ের। তাঁর অভিযোগ, তাড়াহুড়ো করে অঙ্কিতাকে দাহ করেছে প্রশাসন। অঙ্কিতার মায়ের আরও অভিযোগ, প্রশাসন তাঁর সঙ্গে কার্যত চালাকি করেছে। মেয়েকে দেখানোর নাম করে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। ওই তরুণীর মায়ের অভিযোগ, ‘‘মেয়েকে দেখতে চেয়েছিলাম, ওরা বিশ্বাসঘাতকতা করল।’’
গত কাল জানা গিয়েছিল, অঙ্কিতার মা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু আজ একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে (সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি)। তাতে দেখা গিয়েছে, অঙ্কিতার মা দাবি করেছেন, তিনি ভালই আছেন। তাঁকে মিথ্যা অজুহাত দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই ভিডিয়োটিতে দৃশ্যত বিধ্বস্ত অঙ্কিতার মা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার স্বামীকে ওরা জোর করেই নিয়ে গিয়েছিল। অথচ আমাকে নিয়ে গেল না। আমি ওদের বললাম, আমার মেয়েকে দেখতে চাই।’’
অঙ্কিতার মা বলতে থাকেন, ‘‘ওরা আমাকে বলল, চলুন মেয়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। মেয়েকে দেখতে পাবেন। হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে ডাক্তারবাবু আমাকে একটা হুইলচেয়ারে বসিয়ে দিলেন। ওদের বলেছিলাম, আমাকে এখানে আনলেন কেন? আমাকে স্যালাইন দিতে শুরু করল। আর তার পরেই ভিডিয়ো করতে শুরু করল কয়েকজন।’’
এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অঙ্কিতার মা। রোষ প্রশাসনের উপর। ‘বনত্র’ রিসর্টের নিহত রিসেপশনিস্টের মা বলতে থাকেন, ‘‘চার-পাঁচজন লোক এসে বলল আমাকে শ্মশানে নিয়ে যাবে। আমি বলেছিলাম, আমি ওর মা, মেয়েকে না দেখা পর্যন্ত কিছু করব না। যতক্ষণ মেয়েকে না দেখছি, ততক্ষণ এই স্থানীয় প্রশাসনিক অফিস থেকে নড়ব না।’’ এর পর প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলেন, ‘‘আমি অসুস্থ ছিলাম না। শুধু মেয়েটাকে দেখতে চেয়েছিলাম। মেয়েকে দেখানোর নাম করে, ওরা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল।’’ প্রথম থেকেই অভিযোগ উঠছিল, অঙ্কিতা খুনের ঘটনায় যে হেতু শাসক দল বিজেপির নেতার ছেলে পুলকিত মূল অভিযুক্ত, তাই তদন্তের গতি মন্থর করা হচ্ছে। আজ অঙ্কিতার মায়ের বক্তব্য সেই অভিযোগকে আরও জোরালো করল বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত কাল উত্তরাখণ্ডের শ্রীনগর শহরে অলকানন্দা নদীর ধারে অন্ত্যেষ্টি হয় অঙ্কিতার। ময়নাতদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট না পেলে মেয়ের অন্ত্যেষ্টিতে রাজি হচ্ছিল না তাঁর পরিবার। ওই নিহত তরুণীর ‘অটোপ্সি রিপোর্ট’ আজ পাওয়া গিয়েছে। তাতে উল্লেখ, জলে ডুবেই মারা গিয়েছে অঙ্কিতা। তাঁর শরীরের চার-পাঁচটি জায়গায় আঘাতের চিহ্নও মিলেছে।