মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। - ফাইল ছবি।
তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ ও তোলাবাজির অভিযোগ ওঠায় সরিয়ে দেওয়া হতে পারে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখকে। শিবসেনা সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও সেটাই চাইছেন। শিবসেনা ও শরদ পওয়ারের দল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) জোটের তরফে রবিবার এই ইঙ্গিত মিলেছে। সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে জোট সরকারে থাকা দলের প্রবীণ মন্ত্রীদের রবিবারই দিল্লিতে তলব করেছেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। ডাকা হয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার এবং এনসিপি-র রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী জয়ন্ত পাটিলকে। ডেকে পাঠানো হয়েছে অভিযুক্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখকেও। রবিবার রাতেই দিল্লিতে গিয়ে শরদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত।
সদ্য অপসারিত মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংহ শনিবার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে একটি চিঠি লিখে অভিযোগ করেন, মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ তোলাবাজি করে মাসে ১০০ কোটি টাকা তোলার চেষ্টা করছিলেন। ওই চিঠির পরেই তোলপাড় হতে শুরু করে দেশের রাজনীতি। মহারাষ্ট্রের বিরোধী দল বিজেপি দেশমুখের অপসারণ দাবি করে।
শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘‘দেশমুখের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি গুরুতর বিষয়। খতিয়ে দেখার সময় এসে গিয়েছে। আমি আজ দিল্লিতে গিয়ে শরদ পওয়ারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব। শরদই এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
রবিবার সকালে নাসিকে সঞ্জয় এ-ও বলেন, ‘‘কোনও মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ ওঠা উচিত নয়। রাজ্যে শিবসেনা এবং এনসিপি-র জোট গড়ে তুলতে যাঁদের সামান্যতম ভূমিকা ছিল, তাঁরাও এই ঘটনায় আহত, বিব্রত হয়েছেন।’’
শিবসেনা মুখপাত্রের বক্তব্য, মানুষ এটাকে পত্রবোমা বলছেন। সেই চিঠির মর্মবস্তুর সত্যাসত্য বিচার করতে পারেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী এবং শরদ পওয়ারই। দেশমুখ নিজেও ঘটনার তদন্ত চেয়েছেন।
অন্য দিকে, রবিবার সকালেই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার পথে হাঁটার হুমকি দেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পরমবীরের তোলা সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। অভিযোগের কোনও প্রমাণ নেই। সেই কারণেই ওঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।’’
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরেই টুইটারে সরব হয়েছিলেন অনিল। তিনি লিখেছিলেন, ‘প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিংহ নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। মুকেশ অম্বানী ও মনসুখ হিরণের মামলায় সচিন ওয়াজের যোগাযোগ যত স্পষ্ট হচ্ছে, ততই নিজেকে বাঁচাতে চাইছেন পরম। এর থেকেই প্রমাণিত হয়, তদন্ত ঠিক পথে চলছে ও পরমবীরের দিকে ইঙ্গিত করছে’। তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘এত দিন পরে কেন এ সব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পরমবীর। চাইলে তখনই তো সবাইকে সব জানাতে পারতেন’!
ও দিকে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস দাবি করেছেন, ‘‘এই ঘটনার পরে হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত, অথবা উদ্ধব ঠাকরের উচিত তাঁকে সরিয়ে দেওয়া।’’