জি-২৩-র অন্যতম সদস্য কপিল সিব্বল ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য নন বলে বৈঠকে ছিলেন না। তাঁর দাবি, গান্ধী পরিবারের স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানো উচিত। ‘ঘর কি কংগ্রেস’-এর বদলে ‘সব কি কংগ্রেস’ প্রয়োজন। এখনও যদি কংগ্রেসকে চিন্তন শিবির ডেকে সমস্যা বুঝতে হয়, তা হলে কংগ্রেস নেতৃত্ব রূপকথার রাজ্যে বাস করছেন।
ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যের ভোটে বিপর্যয়ের পরে আবেগের তাস খেলে সনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতে দলের মধ্যে বিক্ষুব্ধদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মুখ বন্ধ হওয়ার বদলে আগ্নেয়গিরির লাভার মতো কংগ্রেসের অন্দরের ক্ষোভ ছিটকে বের হতে শুরু করল।
কপিল সিব্বল, সন্দীপ দীক্ষিতের মতো বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে আজ সুনীল জাখর, হরিশ রাওয়তের মতো এত দিন মুখ বন্ধ করে থাকা নেতারাও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। সিব্বলের দাবি, গান্ধী পরিবার নেতৃত্ব থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াক। শীলা দীক্ষিতের পুত্র সন্দীপ দীক্ষিতের অভিযোগ, বারবার হার সত্ত্বেও কংগ্রেস হাইকমান্ডের গুমর যায়নি। তাঁদের তোষামোদকারীদেরও ভোল বদলায়নি। কিছু বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা অন্য দলে পা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে সূত্রের খবর। উল্টো দিকে অশোক গহলৌত, মানিকম টেগোরের মতো গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন নেতারা বিক্ষুব্ধদের পাল্টা আক্রমণ করে হয় তাঁদের ‘অকৃতজ্ঞ’ বলছেন, না হলে তাঁরা বিজেপি-আরএসএসের ভাষায় কথা বলছেন বলে অভিযোগ তুলছেন। তাতেও অবশ্য বিক্ষুব্ধদের থামানো যাচ্ছে না। বুধবার দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের জি-২৩ গোষ্ঠী বৈঠকে বসতে পারেন বলেও সূত্রের খবর।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে সনিয়া গান্ধী বলেছিলেন, দলের স্বার্থে তিনি, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা, গান্ধী পরিবারের তিন জনই সরে দাঁড়াতে পারেন। এই চালের পরে সে সময় সকলেই বলেছিলেন, নতুন সভাপতি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সনিয়াকেই সভানেত্রী থাকতে হবে। তার পরে রাহুল গান্ধীকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার দাবিও ওঠে।
জি-২৩-র অন্যতম সদস্য কপিল সিব্বল ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য নন বলে বৈঠকে ছিলেন না। তাঁর দাবি, গান্ধী পরিবারের স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানো উচিত। ‘ঘর কি কংগ্রেস’-এর বদলে ‘সব কি কংগ্রেস’ প্রয়োজন। এখনও যদি কংগ্রেসকে চিন্তন শিবির ডেকে সমস্যা বুঝতে হয়, তা হলে কংগ্রেস নেতৃত্ব রূপকথার রাজ্যে বাস করছেন।
রাহুলকে আজ সংসদে সিব্বলের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। রাহুলকে ফের সভাপতি করার দাবি নিয়ে সিব্বলের মন্তব্য, রাহুল এমনিতেই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। রাহুলই পঞ্জাবে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চরণজিৎ সিংহ চন্নীর নাম ঘোষণা করেছিলেন। কোন পদাধিকার বলে তিনি এই কাজ করেছিলেন? ফলে রাহুলই ‘ডি ফ্যাক্টো’ সভাপতি। চন্নীকে মুখ্যমন্ত্রী করায় পঞ্জাবের নেতা সুনীল জাখর ক্ষুব্ধ ছিলেন। আজ জাখর বলেছেন, রাহুল তাঁকে চন্নীর অধীনে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হতে বলেছিলেন। তিনি রাজি হননি।
জি-২৩-র আর এক সদস্য সন্দীপ দীক্ষিত সিব্বলকে সমর্থন করে জানিয়েছেন, গোটা দল নিষ্ক্রিয়। সিব্বল আজ বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার, এক সময় সবাই কংগ্রেসে ছিলেন। এখন তাঁরা বেরিয়ে গিয়েছেন। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বলেছেন, সিব্বল কোনও দিনই কংগ্রেসের মতাদর্শপন্থী ছিলেন না।