পরের লোকসভায় ‘যে কোনও মূল্যে’ উত্তরপ্রদেশে সনিয়া ও রাহুল গাঁধীকে হারাতে চাইছেন অমিত শাহ।
নরেন্দ্র মোদীর হাওয়ায় গত লোকসভায় উত্তরপ্রদেশে ৮০টির মধ্যে ৭৩টি আসনই পেয়েছিল বিজেপি। বিরোধীদের হাতে যাওয়া সাতটি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছিলেন মুলায়ম সিংহ নিজে ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বাকি দুটি সনিয়ার রায়বরেলী ও রাহুলের অমেঠী। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, সনিয়া ও রাহুলই হলেন কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতা। একবার তাঁদের হারাতে পারলে গোটা কংগ্রেসকে দুর্বল করা যাবে। দল ভেঙে কংগ্রেসের অনেক অসন্তুষ্ট নেতাই তখন বিজেপির দিকে পাড়ি দেবেন।
অমেঠী ও রায়বরেলী আসনটি বরাবরই কংগ্রেসের গড় বলে ধরা হয়। সঞ্জয়-রাজীব-সনিয়া গাঁধী জিতে এসেছেন অমেঠী থেকে। রায়বরেলী থেকে ফিরোজ-ইন্দিরাও জিতেছেন। ২০০৪ থেকে অমেঠী থেকে রাহুল ও রায়বরেলী থেকে সনিয়া লাগাতার জিতছেন। ২০১৪ সালে অমেঠীতে রাহুলকে হারানোর জন্য নরেন্দ্র মোদী স্মৃতি ইরানিকে প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি জিততে না পারলেও রাহুলের ভোট কমেছিল। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে যে অঙ্ক বেরিয়ে এসেছে, তাতে উৎসাহিত নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটি।
এই অঙ্ক বিশ্লেষণ করতেই দু’দিন আগেই দিল্লিতে কংগ্রেসের ওয়ার-রুমে বৈঠক হয়। সেখানে অমেঠী-রায়বরেলী ধরে রাখা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নেতারা। কারণ, গত লোকসভায় রাহুলের জয়ের ব্যবধান যেখানে দেড় লক্ষ ভোটের বেশি ছিল, সেখানে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস পিছিয়ে গিয়েছে ১ লক্ষেরও বেশি ভোটে। রায়বেরলীতে সনিয়ার জয়ের ব্যবধান ছিল সাড়ে তিন লক্ষ ভোটের। সেটি কমে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের মোট জয়ের ব্যবধান মাত্র ত্রিশ হাজার। বিধানসভায় অমেঠী-রায়বরেলীতে সব মিলিয়ে কংগ্রেস ২ টি আসনে জিততে পেরেছে। ৪ আসনে তৃতীয়, চতুর্থ স্থানে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘এই দুই কেন্দ্র নিরাপদ রাখতে দলকে কিছু করতেই হবে।’’
এর একমাত্র বিকল্প হিসেবে কংগ্রেস এখন দেখছে মহাজোট। ২০১৪ সালে এই দুই কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টি প্রার্থী দেয়নি। এ বার সপা-বিএসপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসনগুলি বের করতে হবে বলে মনে করছে কংগ্রেস। জেডি(ইউ) নেতা কে সি ত্যাগী তো প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘বিহারের মতো মহাজোট না হলে অমেঠী-রায়বরেলীতেও ঘোর সঙ্কট।’’ বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, মহাজোট হবে। এমনকী লোকসভায় সনিয়ার পরিবর্তে প্রিয়ঙ্কাও লড়তে পারেন। অমিত শাহ মনে করছেন, এই সব কিছু ধরেই সংগঠনকে এতটাই শক্তিশালী করতে হবে, যাতে বিজেপি জিততে পারে। অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ তাই বলেন, ‘‘বিরোধীরা যতই জোট করুক, বিজেপিকে উত্তরপ্রদেশে ঠেকাতে পারবে না। হাতের বাইরে থাকা গত বারের সাতটি আসনেও এ বার জিতবে দল।’’