Pranab Mukherjee

‘রাহুল গান্ধীর আচরণে বাবা অসন্তুষ্ট ছিলেন’! কেন বললেন প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়?

প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা ২০১৯ সালে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র হয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে দলের সদস্যপদের পাশাপাশি সক্রিয় রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:১০
Share:

(বাঁ দিক থেকে) রাহুল গান্ধী, প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

কংগ্রেসের সদস্যপদ ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের কথা ঘোষণা করেছিলেন দু’বছর আগেই। এ বার প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা শর্মিষ্ঠা তাঁর পিতার স্মৃতিচারণায় কংগ্রেস নেতৃত্বকে নিশানা করেছেন বলে জল্পনা তৈরি হল। আর তার কারণ স্বয়ং শর্মিষ্ঠাই।

Advertisement

ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শর্মিষ্ঠা তাঁর প্রকাশিতব্য বই ‘ইন প্রণব, মাই ফাদার: এ ডটার রিমেম্বার্স’-এর সারাংশ নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কিছু আচরণ প্রণবের মনঃপূত ছিল না। এ প্রসঙ্গে ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সরকারের জারি করা অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলার জন্য প্রকাশ্যে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের উল্লেখ করেছেন শর্মিষ্ঠা। সে সময় প্রণব ছিলেন দেশের রাষ্ট্রপতি।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে পশুখাদ্য দুর্নীতির একটি মামলায় আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের জেলের সাজা হওয়ার পরেই দাগি সাংসদ-বিধায়কদের সদস্যপদ বাঁচাতে ওই অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল তৎকালীন ইউপিএ সরকার। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের সংশোধন চেয়ে বিল পেশ করা হয়েছিল সংসদে। রাহুলের মন্তব্যের পরে দু’টিই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে প্রণব-কন্যার মন্তব্য, ‘‘আমার বাবার মত ছিল, প্রকাশ্যে রাহুলের মন্তব্য রাজনৈতিক অপরিপক্কতার পরিচয়।’’

Advertisement

২০১৪-র লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির পরে লোকসভায় রাহুলের ধারাবাহিক অনুপস্থিতি নিয়েও প্রণব অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে দাবি করেছেন শর্মিষ্ঠা। প্রসঙ্গত, এর আগে প্রণবের আত্মকথার শেষ পর্ব ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস’-এর একাংশ প্রকাশ্যে আসার পরই তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক হয়েছিল। ওই আত্মজীবনীতে প্রণব লিখেছিলেন, ‘‘কংগ্রেসের কয়েক জন সদস্য তত্ত্বগত ভাবে মনে করেন যে ২০০৪-এ আমি প্রধানমন্ত্রী হলে ’১৪-র লোকসভায় ভরাডুবির হাত থেকে বেঁচে যেত দল। যদিও আমি তা মনে করি না। আমার মতে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই দলীয় নেতৃত্ব রাজনৈতিক লক্ষ্য হারিয়েছিলেন। এক দিকে, সনিয়া দল চালাতে অপারগ ছিলেন। অন্য দিকে, সংসদে দীর্ঘ দিন অনুপস্থিতির কারণে সাংসদদের থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ঘুচে গিয়েছিল।’’

শর্মিষ্ঠা সাক্ষাৎকারে প্রণবের প্রধানমন্ত্রিত্বের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার বাবা এক বার এক সাংবাদিককে বলেছিলেন, সনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রত্যাশা করেন না।’’ রাহুলের রাজনৈতিক ভাবনাচিন্তার ‘বাস্তবতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রণব-কন্যা। প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস নেতার ডায়েরির একটি অংশ উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘‘২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বলেছিলেন, জোট সরকারের প্রতি তাঁর কোনও আস্থা নেই।’’

প্রসঙ্গত, প্রণবের পর মুখোপাধ্যায় পরিবারে কংগ্রেসের ধ্বজা ধরে রেখেছিলেন তাঁর ছেলে অভিজিৎ এবং মেয়ে শর্মিষ্ঠা। কিন্তু ২০২১ জুলাইয়ে তৃণমূলে যোগ দেন জঙ্গিপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ। খ্যাতনামী কত্থকশিল্পী শর্মিষ্ঠা ২০১৪ সালের গোড়ায় সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৫-য় দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে গ্রেটার কৈলাস আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আম আদমি পার্টি (আপ)-র সৌরভ ভরদ্বাজের কাছে হেরে যান। ২০১৯-এ তিনি কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র হন। ওই বছরই দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির জনসংযোগ বিষয়ক প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেন শর্মিষ্ঠা। ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে সক্রিয় রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement