অমিত শাহ। —ফাইল ছবি।
জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনে বিজেপি যে জাতীয়তাবাদের পথেই প্রচার চালাবে, শুরুতেই তা স্পষ্ট করে দিলেন অমিত শাহ।
গত কাল বিজেপির ইস্তাহার প্রকাশ করেছিলেন শাহ। আজ গণেশ চতুর্থীর দিন থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলের প্রচার শুরু করেছেন তিনি। এ দিন দলীয় সমর্থকদের সামনে গুজরাতের ধাঁচে ‘পৃষ্ঠা প্রমুখ’ পর্যায় পর্যন্ত দলকে শক্তিশালী করার উপরে জোর দিয়েছেন শাহ। সাধারণত বুথ কমিটির নীচে থাকেন ‘পৃষ্ঠা প্রমুখ’ সদস্যেরা। তাঁদের কাজ, কোনও বুথের নির্বাচনী তালিকায় কোনও একটি বা দু’টি পৃষ্ঠায় যত ভোটার রয়েছে, তাঁদের ভোট নিশ্চিত করা। আজ ‘পৃষ্ঠা প্রমুখ’দের উদ্দেশে শাহের পরামর্শ, ‘‘প্রত্যেক পৃষ্ঠা প্রমুখকে নিজের পরিবারের বাইরেও আরও তিনটি পরিবারের ভোট নিশ্চিত
করতে হবে।’’
৯০ আসনের জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় ৪৩টি আসন রয়েছে জম্মু থেকে। স্বভাবতই হিন্দু প্রধান জম্মুতে বেশি সংখ্যায় জিতে কাশ্মীরে সরকার গড়ার দাবি মজবুত করতে চাইছে বিজেপি। তাই হিন্দু ভোটের মেরুকরণে শুরু থেকেই জাতীয়তাবাদের বিষয়টি সামনে রাখার কৌশল নিয়েছেন অমিত। আজ তিনি কংগ্রেস-সহ উপত্যকার দুই পারিবারিক আঞ্চলিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিডিপি-কে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছেন। শাহ বলেন, ‘‘কংগ্রেস, এনসি ও পিডিপি— এই তিন দলেরই লক্ষ্য হল, কাশ্মীরে জঙ্গি তৎপরতা ফিরিয়ে আনা। সেই কারণে এরা সেই সব জঙ্গিদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলছে, যারা পাথর ছুড়ে উপত্যকা অস্থির করে তুলেছিল। আসলে এরা রাজৌরি, পুঞ্চের মতো এলাকাতেও জঙ্গি সক্রিয়তা বাড়াতে চাইছে।’’ অমিতের কথায়, ‘‘কংগ্রেসের মদতে ওই দুই পারিবারিক দল জম্মু ও কাশ্মীরকে দীর্ঘ দিন ধরে লুট করেছে। আবার তাঁরা ক্ষমতায় ফেরার পরিকল্পনা নিয়েছে।’’ তবে এই দলগুলি ক্ষমতায় ফিরলে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাস ফিরে আসবে বলে জম্মুবাসীকে সতর্ক করেন শাহ।
গত পাঁচ বছরের বেশি সময় জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসন কেন্দ্রের হাতেই রয়েছে। স্বভাবতই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া রয়েছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। রাজনীতিকদের একাংশের মতে, উন্নয়নের ঢাক বাজিয়ে সেই হাওয়ার মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বুঝে জাতীয়তাবাদের প্রচারে ভরসা রাখতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই গোড়া থেকেই পাকিস্তান প্রসঙ্গে আক্রমণ শুরু করেছেন শাহেরা। শাহ আজ ফের জানান, যত দিন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দেওয়া বন্ধ না করবে, তত দিন সে দেশের সঙ্গে আলোচনায় বসবে না ভারত। এনসি ক্ষমতায় এলে কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য শুরু করবে বলে যে দাবি করছে, তা সম্ভব হবে না বলে জানান শাহ। তাঁর দাবি, এতে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা
শক্তিশালী হবে।
এনসি-র মতো দল ক্ষমতায় এলে জম্মু ও কাশ্মীরের স্বশাসন তথা রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছে। শাহ বলেন, ‘‘জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা একমাত্র ফিরিয়ে দিতে পারে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আগেই বলেছি, ঠিক সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কংগ্রেস, এনসি মানুষকে যে ভুল বোঝাচ্ছে, তা
বন্ধ হোক।’’