অতিরিক্ত ভরসাতেই কি ধাক্কা

জিতেও হেরে গেলেন অমিত

একের পর এক জয়ের সূত্রে বিজেপি শিবিরে অমিত শাহ এখন ‘চাণক্য’ বলেই পরিচিত। বিজেপিকে বিশ্বের ‘বড়’ দল করে তুলে, আর ১৮ রাজ্যে সরকার গড়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন টগবগ করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

রাজ্যসভা নির্বাচনে নিজে জিতলেও নিজের রাজ্যেই মুখ পুড়ল অমিত শাহের!

Advertisement

লোকসভা ভোটে তিনি ছিলেন নরেন্দ্র মোদীর ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’। প্রধানমন্ত্রী হয়ে তাই এই ‘বিশ্বস্ততম’ সেনাপতিকেই বিজেপির পুরো ভার সঁপে দিয়েছিলেন। আজ দলের সভাপতি হিসেবে তিন বছর পূর্ণ করলেন অমিত শাহ। ভেবেছিলেন, মোদী-রাজ্য গুজরাতে তিনটি আসন জিতে তিন বছরের উৎসব পালন করবেন। কিন্তু নিজে রাজ্যসভা ভোটে জিতলেও কংগ্রেসের থেকে ছিনিয়ে নিতে পারলেন না তৃতীয় আসনটি। এই হারই ছাপিয়ে গেল অমিত শাহের নিজের জয়কে।

প্রশ্ন উঠেছে, অমিত শাহের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণেই কি ধাক্কা খেতে হল বিজেপিকে?

Advertisement

একের পর এক জয়ের সূত্রে বিজেপি শিবিরে অমিত শাহ এখন ‘চাণক্য’ বলেই পরিচিত। বিজেপিকে বিশ্বের ‘বড়’ দল করে তুলে, আর ১৮ রাজ্যে সরকার গড়ে আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন টগবগ করে। সে কারণেই হয়তো ভাবেননি, লোকসভায় পিঠ ঠেকে যাওয়া কংগ্রেস শেষ মুহূর্তে এই ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। ভাবেননি, কংগ্রেসের পোড় খাওয়া ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ আহমেদ পটেলের জন্য সর্বশক্তি লাগিয়ে দেবেন সনিয়া গাঁধী। ভাবেননি, অরুণ জেটলি, রবিশঙ্কর প্রসাদদের মতো ওজনদার মন্ত্রীদের পাঠানোর পরেও নির্বাচন কমিশন বিজেপির বিরুদ্ধে মত দিতে পারে। কংগ্রেসও আশা করেনি, নির্বাচন কমিশন বিজেপির বিরুদ্ধে রায় দেবে। খোদ সনিয়া গাঁধী আজ বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের জন্য ইশ্বরকে ধন্যবাদ। এই জয়ে নিশ্চিন্ত হলাম। খুব টেনশন ছিল।’’

আরও পড়ুন: রাতের খেলায় দুরন্ত স্লগ ওভার

নরেন্দ্র মোদী আজ সকালে তাঁর ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীদের বলেছেন, গুজরাতের তৃতীয় আসনটির জন্য এতটা বাড়াবাড়ি না করলেও হতো। কিন্তু মোদী নিজেকে এখন দূরে রাখার চেষ্টা করলেও বিজেপির মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, কী হবে গুজরাতের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে? কারণ, আহমেদ পটেল জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পর কংগ্রেস এখন আগের থেকে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ ও উজ্জীবিত। বিজেপি নেতারা অবশ্য মনে করছেন, জনতার দরবারে কংগ্রেস কোনও ভাবেই দানা বাঁধতে পারবে না। কংগ্রেসের উপরে শুধু মানুষ ভরসা হারিয়েছেন, এমন নয়। কংগ্রেসের বিধায়কদেরও ভরসা নেই দলের উপর। তাই সে দল ভাঙছে। আর আহমেদ পটেলও এমন কিছু জনপ্রিয় ব্যক্তি নন গুজরাতে। কংগ্রেসের মধ্যেই তাঁর বিরোধিতা আছে। বিধায়কদের ভিন্ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে না রাখলে আরও বড় ব্যবধানে হারতেন পটেল।

বিজেপির এক শীর্ষ নেতা এ-ও বলছেন, ‘‘রাজ্যসভার নির্বাচন জনতার ভোট নয়। আহমেদ পটেল পেয়েছেন ৪৪টি ভোট। দু’জনের ভোট বাতিল না হলে দ্বিতীয় পছন্দের ভোটে বিজেপি প্রার্থীই জিততেন। নির্বাচন কমিশন খেলা না ঘোরালে হারের মুখ দেখতে হতো আহমেদকে।’’ বিজেপি ঘোষণা করেছে, দু’টি ভোট বাতিলের ব্যাপারে তারা কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement