কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি— পিটিআই।
গত ৯ ডিসেম্বর, অরুণাচলের তাওয়াংয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর এলাকায় ভারত ও চিনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)-র মধ্যে সংঘাতের প্রেক্ষিতে সংসদ সরগরম। সরকারি বক্তব্যের দাবিতে বিরোধীদের হাঙ্গামার জেরে মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন। এই প্রেক্ষিতে কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, সরকারের জবাবের জন্য নয়, কংগ্রেসের বিক্ষোভের ‘আলাদা কারণ’ আছে।
এ দিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘাত নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বিবৃতির ঠিক আগে শাহ বলেন, ‘‘প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিবৃতি দেবেন এটা জানার পরেও কংগ্রেস দুর্ভাগ্যজনক ভাবে প্রশ্নোত্তর পর্ব ভণ্ডুল করে দিল। আমি প্রশ্নোত্তর পর্বের তালিকা দেখেছি। সেখানে ৫ নম্বর প্রশ্নটি দেখেই বুঝতে পেরেছি কংগ্রেস কেন এমন করছে। কংগ্রেসের উদ্বেগ বুঝি। এক কংগ্রেস সাংসদ প্রশ্নটি করেছিলেন, আমাদের কাছে জবাবও তৈরি ছিল। কিন্তু ওঁরা অধিবেশন ভণ্ডুল করে দিল।’’
দু’মাস আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর রাজীব গান্ধীর নামে তৈরি ফাউন্ডেশন, যাঁর প্রধান তাঁর স্ত্রী তথা কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী, সেই প্রতিষ্ঠানের নথিভুক্তি (রেজিস্ট্রেশন) বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তের পর অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার, শাহ বলেন, ‘‘যদি ওঁরা অধিবেশন চলতে দিতেন, তা হলে আমি সংসদে দাঁড়িয়ে উত্তর দিতাম যে, ২০০৫-০৬ এবং ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষে রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা অনুদান হিসাবে চিন দূতাবাস থেকে পেয়েছে। যা ‘ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট’ (এফসিআরএ)-এ নীতির পরিপন্থী। তাই আইন মেনেই ওই সংস্থার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে।’’ এ বিষয়ে এখনও কংগ্রেসের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
শাহ অরুণাচলে ভারত-চিন সংঘাত নিয়েও মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, মোদী সরকার যত দিন ক্ষমতায় রয়েছে, কেউ আমাদের জমির এক ইঞ্চিও দখল করতে পারবেন না।’’
গত শুক্রবার অরুণাচল প্রদেশে চিন সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় সেনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাত হয় চিনের লালফৌজের। দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন সেনা আহত হয়। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে সরব হন বিরোধীরা। মঙ্গলবার সংসদের অধিবেশনের শুরুতেও একই দাবি তোলা হয়। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলোর দাবি, মোদী সরকার শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারতে পারে না। এই বিষয় নিয়ে সংসদে অন্য সমস্ত কাজ থামিয়ে আলোচনার দাবি করছেন তাঁরা।
রাজনাথের বিবৃতির পরই বিরোধীরা লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। নিজের বিবৃতিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘সংঘাতে এক জন ভারতীয় সেনারও মৃত্যু অথবা গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হননি।’’ কিন্তু এই বিষয় নিয়ে আলোচনার অনুমতি দেননি স্পিকার। তারই প্রতিবাদে ওয়াকআউট।