রাজনাথের ব্যাখ্যা শুনে ওয়াক আউট করলেন বিরোধীরা। ফাইল চিত্র।
ভারত-চিনের সেনা সংঘাত বড় ঘটনা নয়, বরং এই ধরনের বিষয় সামলে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতই থাকে ভারতীয় সেনাবাহিনী— সংসদে তাওয়াঙের ঘটনা নিয়ে এমনই ব্যাখ্যা দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তাঁর কথা শুনে প্রতিবাদে লোকসভার অধিবেশন ছেড়ে ওয়াকআউট করলেন বিরোধীরা।
গত শুক্রবার অরুণাচল প্রদেশ এবং চিনের সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘাত হয় চিনের লালফৌজের। দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন সেনা আহত হয়। সেই খবর প্রকাশ্যে আসার সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে সরব হন বিরোধীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের জটিলতার কথা দেশের মানুষের নজর থেকে আড়াল করে রাখতে চাইছে কেন্দ্র। এ বিষয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনাও চেয়েছিলেন কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিরোধী দলের সাংসদেরা। মঙ্গলবার দুপুরে তারই জবাব সংসদে বিবৃতি দেন রাজনাথ। তাওয়াঙের ঘটনায় সেনার ভূমিকার প্রশংসা করেই তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় সেনা সময়ে হস্তক্ষেপ করেছিল বলেই পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়। চিনের পিপল লিবারেশন আর্মির জওয়ানরা পিছু হঠতে বাধ্য হন।’’ এর পরেই রাজনাথ বলেন, ‘‘ ... তা ছাড়া, অরুণাচল সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনাবাহিনীর কারও মৃত্যু হয়নি। কেউ বড় ধরনের আঘাতও পাননি। আমরা জানি এটুকু সমস্যা সামলে নেওয়ার ক্ষমতা আছে ভারতীয় সেনার।’’
রাজনাথের এই বক্তব্যের পরই নতুন করে গন্ডগোল শুরু হয় লোকসভায়। স্পিকার ওম বিড়লাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সেনা বাহিনীর প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য সাংসদরা দয়া করে একজোট হোন।’’ কিন্তু তার পরও গন্ডগোল জারি থাকে। বিরোধী সাংসদরা এক যোগে ওয়াকআউট করেন সংসদের নিম্নকক্ষের অধিবেশন থেকে।
মঙ্গলবার অবশ্য রাজনাথের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও তাওয়াঙের ঘটনা নিয়ে বিবৃতি দেন। অমিত বলেন, যত দিন দেশে বিজেপি সরকার রয়েছে। দেশের এক ইঞ্চি জমিও ছিনিয়ে নিতে পারবে না কেউ। সেনাবাহিনীর শৌর্যের প্রশংসা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি তাওয়াঙের সেনা জওয়ানদের অভিবাদন জানাতে চাই। যাঁরা ৮ এবং ৯ ডিসেম্বরের রাতে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে চিনের সেনাবাহিনীর সামনে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় অতিক্রম করে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। তার পরেই দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন আহত হন। হাতাহাতি এবং লাঠি-পাথর নিয়ে সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার ৬ জন জওয়ান ‘সামান্য আহত’ হন বলে জানিয়েছিল সংবাদ সংস্থা।