—প্রতীকী চিত্র।
ভারতীয় দণ্ডবিধি বদলে নতুন আইন ন্যায়সংহিতা আনতে বদ্ধপরিকর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তথা নরেন্দ্র মোদী সরকার। ৬ নভেম্বর এই বিষয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির শেষ বৈঠক বসতে চলেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এটি রুখতে একযোগে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার দলগুলি। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে ইন্ডিয়া জোটের যৌথ উদ্যোগ বিশেষ চোখে পড়ছে না ঠিকই। কিন্তু এই সংসদীয় কমিটিতে কংগ্রেসের পি চিদম্বরম এবং তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনকে সমন্বয় করে লড়তে দেখা যাচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন ডিএমকে-র সাংসদও।
পুলিশি সংস্কার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন’-এর আগেই সংসদীয় কমিটির কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল ন্যায়সংহিতার প্রশ্নে তাদের বিস্তারিত মতামত জানিয়ে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, কাল তারা সেই স্মারকলিপির একটি প্রতিলিপি দেয় ডেরেককে। আজ একটি চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিজ লালকে পাঠিয়েছেন ডেরেক। জানা গিয়েছে, চিঠিতে তিনি কমিটিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ‘ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন’ বা আইপিএফ যে ভাবে নতুন আইনের প্রতিটি ধারা বিশ্লেষণ করে ব্যাখ্যা করেছে, তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ এই গোষ্ঠী এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, তাদের মতামতের গুরুত্ব কম নয়। এই ফাউন্ডেশন যে পুলিশি সংস্কার, মানদণ্ড তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত সে কথা উল্লেখ করে ওই চিঠিতে ডেরেক লিখেছেন সংসদীয় কমিটিতে বিল নিয়ে আলোচনার সময়ে এই সংস্থার সদস্যদের মতামতের জন্য অবশ্যই ডেকে পাঠানো প্রয়োজন। সঙ্গে তিনি এ কথাও লেখেন, এখনও পর্যন্ত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কোনও পক্ষকেই ডেকে পাঠানো হয়নি। এর আগের চিঠিতেও তিনি উল্লেখ করেছিলেন, লাখ লাখ প্রান্তিক, গরিব মানুষের ভাল মন্দের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই বিষয়টি নিয়ে অযথা তাড়াহুড়ো যেন না করা হয়।
সূত্রের খবর, এর আগে ২৫ অক্টোবর কমিটির সদস্য পি চিদম্বরমও ব্রিজ লালকে চিঠি লিখে জানান, তিনি এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ফোন পেয়েছেন। তাদেরও ক্ষোভ আইন বদলের প্রশ্নে বড় বেশি তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে। যে পরামর্শগুলি ‘ইন্ডিয়ান পুলিশ ফাউন্ডেশন’ দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, দণ্ডধারার যে বিন্যাস এবং ক্রম রয়েছে সেগুলির যেন বদল না ঘটানো হয়, কারণ তাতে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। ভারতীয় ন্যায়সংহিতার ক্ষেত্রে অপরাধীদের ই-ট্যাগিং চালু করা, বর্তমানে যে বিশেষ আইনগুলি রয়েছে সেগুলির মধ্যে যেন সংঘাত বা পুনরাবৃত্তি না হয় তা দেখা, মহিলার বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে আইনটিকে আরও স্পষ্ট করার মতো পরামর্শ রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে গণপ্রহার সংক্রান্ত আইনটির খসড়া নতুন করে করা, খাদ্যে ভেজালের জন্য শাস্তিকে আরও দৃঢ় করার মতো বিষয়গুলি। এ ছাড়া বলা হয়েছে একই অপরাধে বিভিন্ন এফআইআর হলে সেটিকে সামাল দেওয়ার জন্য উন্নত ব্যবস্থা তৈরি করা, সংশোধনাগারের পরিচালন ব্যবস্থাকে উন্নততর করার মতো প্রস্তাব। চিদম্বরমও ব্রিজ লালকে চিঠিতে জানিয়েছেন, এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।