কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের উপরে উঠে প্রতিটি দেশকে সন্ত্রাসবাদ দমনে জঙ্গি সংগঠনগুলির উপরে আর্থিক অবরোধ গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লিতে দু’দিন ধরে চলা ‘নো মানি ফর টেরর’ শীর্ষক সম্মেলনের শেষ দিনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনগুলির আর্থিক লেনদেনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য সব দেশকে এগিয়ে আসার জন্য আজ অনুরোধ করেন শাহ।
দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ তুলে চিন ও পাকিস্তানকে গতকাল নিশানা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শাহ। আজও নাম না-করে সন্ত্রাসে উস্কানি দেওয়ার প্রশ্নে ফের পাকিস্তানের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে শাহ বলেন, ‘‘কিছু দেশ সন্ত্রাসবাদীদের খোলাখুলি সমর্থন করে থাকে এবং তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়াকে সে দেশের জাতীয় নীতিতে পরিণত করে ফেলেছে।’’
স্বরাষ্ট্র বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে শাহ আসলে ইসলামাবাদ ও পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। সন্ত্রাস নির্মূলের জন্য জঙ্গিদের ‘সেফ হেভেন’-এ ধরপাকড় ও জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির আর্থিক লেনদেন চিহ্নিত করে অর্থের উৎসকে ধ্বংস করায় জোর দেন শাহ। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসের কোনও আন্তর্জাতিক সীমানা নেই। সব দেশের উচিত ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের উপরে উঠে সন্ত্রাস দমনে পরস্পরকে সাহায্য করা। কোনও একটি দেশ যতই শক্তিশালী হোক না কেন, একার পক্ষে কোনও ভাবেই সন্ত্রাস দমন সম্ভব নয়।’’
সম্প্রতি পিএফআই-কে সন্ত্রাসমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্র। শাহের মতে, প্রতিটি দেশেই এমন কিছু সংগঠন থাকে যারা প্রকৃত উদ্দেশ্য গোপন করে তলে তলে জঙ্গি ভাবধারা প্রচার ও মৌলবাদকে উস্কানি দিয়ে চলে। শাহের কথায়, ‘‘কেন্দ্র সম্প্রতি এমন এক সংগঠন (পিএফআই)-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ ধরনের সংগঠন সব দেশেই রয়েছে। প্রতিটি দেশের উচিত এ ধরনের সংগঠন চিহ্নিত করে কড়া পদক্ষেপ করা।”
গোয়েন্দাদের মতে, ড্রাগ, ক্রিপ্টোকারেন্সি, হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের মতো সংগঠিত অপরাধ থেকে অর্জিত অর্থ সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহারের প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এ ধরনের সংগঠিত অপরাধ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে উৎসাহ দিচ্ছে, তাই এ ধরনের চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে একটি অভিন্ন রোডম্যাপ তৈরি করার জন্য সব দেশকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন শাহ।