নতুন সংসদ ভবনের কাজের জন্য ঘিরে দেওয়া হয়েছে এলাকা। ছবি: প্রেম সিংহ
টাটা প্রোজেক্টস ও কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরের নাম লেখা নীল রঙের বোর্ড পরপর সারি দিয়ে সাজানো। সংসদ ভবনের সামনের রাস্তা ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। শুরু হয়ে গিয়েছে খোঁড়াখুঁড়ি।
সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, দেরি না-করে ডিসেম্বরেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে শিলান্যাসের মাধ্যমে নতুন সংসদ ভবনের কাজ শুরু হয়ে যাবে। তার আগে মোদী সরকার আজ সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিল, নতুন সংসদ ভবন-সহ সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে অর্থের অপচয় হবে না। বরং অর্থের সাশ্রয় হবে।
প্রায় ৮৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সংসদ ভবন তৈরির জন্য টাটা প্রোজেক্টস বরাত জিতে নিয়েছে। তার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত রাজপথের দু’পাশের এলাকা বা সেন্ট্রাল ভিস্টা ঢেলে সাজানোর জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে মোদী সরকার। প্রশ্ন উঠেছে, কোভিড অতিমারির মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে বা পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরাহা দিতে অর্থ খরচ না-করে মোদী সরকার কেন নয়াদিল্লি সাজাতে অর্থ অপচয় করছে?
আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতায় এলে বিকাশ দুবে করে ছাড়ব’, হুমকি সায়ন্তনের
সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়েছিল। আজকের শুনানিতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেন, এখন সরকারি ভবনগুলিতে সব মন্ত্রকের জায়গা হচ্ছে না। ফলে অনেক বাড়ি ভাড়া নিতে হয়েছে। তার জন্য বছরে ১ হাজার কোটি টাকা গুনতে হয়। ২০ হাজার কোটি টাকার সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সচিবালয় তৈরি হবে। তার অন্তর্ভুক্ত ১০টি ভবনে সমস্ত মন্ত্রকের ঠাঁই হবে। মেহতা বলেন, ‘‘এখন নর্থ ও সাউথ ব্লক ৯০ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে। এতখানি জায়গার অপচয়। কিন্তু অফিসারদের এক মন্ত্রক থেকে আর এক মন্ত্রকে ছুটতে হয়। কেন্দ্রীয় সচিবালয়ে এক জায়গাতেই ৫১টি মন্ত্রক ও দফতর থাকবে। সমন্বয় বাড়বে।’’
সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে পরিবেশের ক্ষতির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেও সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ ছিল। মেহতার যুক্তি, পরিবেশের সব দিকই খেয়াল রাখা হয়েছে। কিন্তু সেন্ট্রাল ভিস্টা চত্বরে হলেও নতুন সংসদ ভবন পৃথক প্রকল্প। বাকি প্রকল্প বানচাল হলেও নতুন সংসদ ভবন তৈরি হবে। মেহতার যুক্তি, সংসদ ভবনের মালিকানা লোকসভার সচিবালয়ের হাতে। সংসদ ভবনে সকলের জন্য বন্দোবস্ত করতে গিয়ে হেরিটেজ ভবনের ক্ষতি হয়েছে। অনেক বার অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
স্বাধীনতার ৭৫-তম বছর, ২০২২-এর মধ্যেই কাজ শেষ করে ফেলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সংসদ ভবন ১৯২৭-এ তৈরি হয়েছিল। আইন পরিষদের জন্য। তখন লোকসভা ও রাজ্যসভা, দুই কক্ষের কথা ভাবা হয়নি। কেন্দ্রের বক্তব্য, এখন লোকসভা, রাজ্যসভায় চাপাচাপি
আরও পড়ুন: বহু দিন পর শুভেন্দুর মুখে ‘নেত্রী’, বার্তা কি কালীঘাটকে
করে বসতে হয়। নতুন ভবনে লোকসভায় ৮৮৮ জনের, রাজ্যসভায় ৩৮৪ জনের বসার ব্যবস্থা থাকবে। যাতে ভবিষ্যতে জনসংখ্যার অনুপাতে সাংসদ সংখ্যা বাড়লেও অসুবিধা না হয়। এখন সেন্ট্রাল হলে যৌথ অধিবেশন বসলে সাংসদদের প্লাস্টিকের চেয়ারে বসতে হয়। তাতে সংসদেরই সম্মানহানি হয়। তবে বর্তমান সংসদ ভবন ‘হেরিটেজ ভবন’ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। সেন্ট্রাল হলে অনুষ্ঠান হবে।