বাধ্যতামূলক বিবাহ নথিভুক্তিকরণ (সংশোধনী) বিল ২০২১ নিয়ে চাপ বাড়ছিল রাজস্থান সরকারের উপর।
রাজস্থান বাধ্যতামূলক বিবাহ নথিভুক্তিকরণ (সংশোধনী) বিল ২০২১ নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল রাজস্থান সরকারের উপর। শেষমেশ তারা জানিয়ে দিল এই আইন চালু করা হচ্ছে না। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত জানিয়েছেন রাজ্যপালের কাছে বিলটি ফেরতের আবেদন জানানো হয়েছে।
এই আইন চালু করে সরকার কি বাল্যবিবাহকেই প্রশ্রয় দিতে চাইছে, এমন প্রশ্ন যখন নানা দিক থেকে উঠতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ই উল্টো সুর শোনা গেল গহলৌতের গলায়। তিনি বলেন, “রাজ্য থেকে বাল্যবিবাহকে সমূলে উপড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর আমরা। এ নিয়ে সরকার জোরকদমে কাজও করছে। কোনও ভাবেই সরকার বাল্যবিবাহকে প্রশ্রয় দেবে না এবং এ নিয়ে কোনও রকম আপসের পথে যাবে না।”
সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের জেরেই এই আইন সংশোধন করতে হয়েছে বলে জানান গহলৌত। সব ধরনের বিবাহকেই সেখানে নথিভুক্ত করতে বলা হয়েছে। তবে এই আইন চালু করতে চাইছে না তাঁর সরকার। ইতিমধ্যেই বিলটি ফেরত পাঠানোর জন্য রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এই আইন নিয়ে বিরোধীরা ভ্রান্ত ধারণার বাতাবরণ সৃষ্টি করছেন। সংশোধনীর ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয় রাজস্থান বাধ্যতামূলক বিবাহ নথিভুক্তিকরণ (সংশোধনী) বিল ২০২১। এর ফলে কোনও নাবালিকার বিয়ের ৩০ দিনের মধ্যে বিবাহ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মা-বাবা বা অভিভাবককে বাধ্যতামূলক ভাবে সরকারের কাছে জমা করতে হত।
বিধানসভায় এই বিল পাশ হওয়ার পরই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় রাজস্থান সরকারকে। বিরোধী দল বিজেপি এবং বেশ কয়েকটি অসরকারি সমাজসেবী সংস্থা এবং সমাজকর্মীরা সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। প্রশ্ন ওঠে, সরকার কি এই আইন চালু করে পরোক্ষে বাল্যবিবাহকেই প্রশ্রয় দিতে চলেছে? যদিও এই যুক্তিকে সে সময়ই খণ্ডন করেছিল রাজ্য সরকার।
কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামেনি। বরং অশোক গহলৌত সরকারের উপর চাপ আরও বেড়েছে। ঘরে বাইরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠায় সোমবার আন্তর্জাতিক শিশুকন্যা দিবসের দিনই সরকার জানিয়ে দেয়, রাজ্যপালের কাছে এই বিল ফেরতের কথা জানানো হবে।