বাঁদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, ডানদিকে এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পর নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও তা মানতে নারাজ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছেন, ‘‘নতুন সরকারের আমলে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে।’’ ঘটনাচক্রে, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের আমেরিকা সফরের পরেই বিদেশমন্ত্রীর গলায় এই ‘আশ্বাসবাণী’ শোনা গিয়েছে।
ট্রাম্পের নতুন পদক্ষেপকে ‘বাস্তববাদী’ বলেও চিহ্নিত করেছেন জয়শঙ্কর। সেই সঙ্গে ফিনানশিয়াল টাইম্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কেউ বাস্তববাদী হওয়ার অর্থ এই নয় যে, তাঁর মধ্যে বিশ্বাস, প্রত্যয় কিংবা অনুভূতি নেই।’’ বিদেশমন্ত্রীর দাবি, ট্রাম্প এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’জনেই ‘সমমনস্ক জাতীয়তাবাদী’। ফলে বিরোধের অবকাশ নেই। গত ৫ মার্চ আমেরিকার কংগ্রেসে যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা করার সময় ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর নীতি থেকে বাদ পড়বে না ভারত। তিনি বলেন, ‘‘ভারত আমাদের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এই ব্যবস্থা আমেরিকার প্রতি ন্যায্য নয়, কখনওই ছিল না।’’
জয়শঙ্করের মতে, অনুভূতির জায়গা থেকেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওই মন্তব্য করেছিলেন। ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতি নিয়ে ভারতের রফতানিকারক সংস্থাগুলি চিন্তায় পড়লেও এখনও প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকার এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। সাউথ ব্লক সরকারি ভাবে নীরব। চলতি সপ্তাহে আমেরিকা সফরে গিয়ে ট্রাম্প সরকারের বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটকিনের সঙ্গে বৈঠক করেন গয়াল। আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিরের ভবিষ্যৎমুখী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনাও করেন তিনি। শুক্রবার গয়াল জানান, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ এর ‘বিকশিত ভারত’-এর পাশাপাশি সার্বিক রণকৌশলগত বোঝাপড়ার নীতি মেনে চলা হবে। ইতিমধ্যেই আমেরিকার বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক ছেঁটেছে মোদী সরকার। জয়শঙ্করের মন্তব্যের পরে অনেকে মনে করছেন, আগামী দিনে সেই তালিকা দীর্ঘতর হতে চলেছে।