গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকারের চাপে উইঘুর মুসলিম অভিবাসীদের ফেরত পাঠিয়ে এ বার ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ তাইল্যান্ড। সে দেশের সমস্ত সরকারি আধিকারিকের আমেরিকার ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে ট্রাম্প সরকারের বিদেশসচিব মার্কো রুবিও জানিয়েছেন।
আমেরিকার বিদেশসচিব একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ৪০ জন উইঘুরকে জোর করে চিনে ফেরত প্রত্যর্পণ করার কারণে বর্তমান তাইল্যান্ডের সরকারের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমি এই সিদ্ধান্ত শিগগিরই কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছি।’’ প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলির আপত্তি উপেক্ষা করে ইতিমধ্যেই অন্তত ৪০ জন উইঘুরকে চিনে ফেরত পাঠিয়েছে তাইল্যান্ড সরকার। চিনে তাঁরা নির্যাতনের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০১৫ সালের পর এ বারই তাইল্যান্ড প্রথম উইঘুর অভিবাসীদের চিনে ফেরত পাঠাল। গত কয়েক বছর ধরেই অভিযোগ উঠেছে, উইঘুর এবং তুর্কিভাষী ১০ লক্ষেরও বেশি মুসলিম ধর্মাবলম্বীকে শিনজিয়াংয়ের বিভিন্ন বন্দিশিবিরে (ডিটেনশন ক্যাম্পে) রাখা হয়েছে। বলপূর্বক তাঁদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের একাধিক রিপোর্টেও উইঘুরদের বন্দি করার অভিযোগে নিশানা করা হয়েছে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সরকারকে। রুবিও বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘জোর করে ইউঘুর মুসলিমদের চিনে প্রত্যর্পণ ঠেকাতে আমেরিকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
কয়েক বছর আগে পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানানো হয়েছিল, আন্তর্জাতিক চোরাবাজারে বিক্রি হওয়া কিডনি, লিভার-সহ বিভিন্ন মানব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বড় অংশের মালিক চিনের বন্দিশিবিরে আটক হতভাগ্য উইঘুর মুসলিমরা! জোর করে তাদের অঙ্গ কেটে বিক্রি করছে বেজিং! প্রসঙ্গত, চল্লিশের দশকে স্বাধীন রাষ্ট্র পূর্ব তুর্কিস্তান দখল করে শিনজিয়াং প্রদেশ তৈরি করেছিলেন একদলীয় চিনের কমিউনিস্ট শাসক মাও জে দং। তার পর উইঘুর মুসলিমরা প্রতিরোধের লড়াই শুরু করেন। সেই সঙ্গে শুরু হয় চিনা সেনার অত্যাচারও। পাশাপাশি, মূল চিনা ভূখণ্ড থেকে সংখ্যাগুরু হান জনজাতির লোকেদের নিয়ে এসে শিনজিয়াংয়ে জনসংখ্যার ভারসাম্য বদলে দেওয়ার চেষ্টাও শুরু হয়। গত ছ’দশকে লাল ফৌজের অত্যাচারে শিনজিয়াংয়ে লক্ষাধিক মুসলিম ভূমিপুত্র নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ।