প্রতীকী ছবি।
রেহাই পেলেন না করোনা-রোগীও। কেরলের পথানামথিত্তা জেলায় কোভিড আক্রান্ত ২২ বছরের তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘটার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত নৌফলকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সন্ধ্যায় নির্যাতিতা ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের অন্য এক মহিলার করোনা ধরা পড়ে। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা হয়। কেরল সরকারের নির্দেশিকা অনুসারে অ্যাম্বুল্যান্সে পরিবারের আর কেউ ছিলেন না। আক্রান্তদের এক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরে দ্বিতীয় জনকে নিয়ে অন্য হাসপাতালে রওনা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। ৪ কিলোমিটারের মধ্যেই ছিল দ্বিতীয় হাসপাতালটি। কিন্তু চালক অন্য রাস্তা ধরে প্রায় ১৮ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে এগিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তায় একটি ফাঁকা জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স থামিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করে চালক। কাউকে সে কথা জানালে ফল ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেয়।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে চিকিৎসকদের ধর্ষণের কথা জানান ওই তরুণী। স্বাস্থ্য পরীক্ষাতেও যৌন হেনস্থার বিষয়টি ধরা পড়ে। রবিবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণের মামলা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সংসদে যাবেন না সুদীপেরা, ঝুঁকি না-নেওয়ার পরামর্শ তৃণমূল নেত্রীর
রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী কেকে শৈলজা এই ঘটনাকে ‘অমানবিক’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে অতীতে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। যার জেরে সমালোচনার মুখে স্বাস্থ্য দফতর। প্রশ্ন উঠছে, অপরাধের রেকর্ড রয়েছে এমন ব্যক্তিকে জরুরিকালীন অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবায় চালক হিসেবে নিয়োগ করা হল কেন? স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ২৯ বছরের ওই যুবককে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। পথানামথিত্তার পুলিশ সুপার বলেছেন, ‘‘ছক কষেই এই কাণ্ড ঘটায় চালক। ইচ্ছা করে অন্য রাস্তা ধরেছিল সে। আমরা সব প্রমাণ সংগ্রহ করছি। ফাস্ট-ট্র্যাক আদালতে বিচারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
ধর্ষণের ঘটনায় সমালোচনার মুখে কেরলের বাম সরকার। বিজেপির দাবি, এর দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করুন স্বাস্থ্য মন্ত্রী। নিভৃতবাসে থাকা অবস্থায় আগামী কাল ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেবে অভিযুক্ত। এর পর পরই স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশ দিয়েছে, প্রতি অ্যাম্বুল্যান্সে অন্তত দু’জন করে কর্মী থাকবে এবং মহিলা রোগী থাকলে তাঁর প্রতি বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। এই ঘটনায় তদন্ত দাবি করে কেরল পুলিশের কাছে চিঠি লিখেছে জাতীয় মহিলা কমিশন।