বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। —ফাইল চিত্র
বিহারের ভোট হতে আট মাসও বাকি নেই। ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই লড়াই বাড়ছে জেডিইউয়ে। সিএএ সম্পর্কে দলের অবস্থান নিয়ে মুখ খুলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। বিজেপির সঙ্গে জোট করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক পবন বর্মা। আর আজ নীতীশকে আক্রমণ করলেন দলের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক অমরনাথ গামি। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির জন্য আদর্শ বিসর্জন দিতেও আপত্তি নেই নীতীশের। তবে আজ বিক্ষুব্ধ নেতাদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। বর্মা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘উনি যেখানে খুশি যেতে পারেন।’’
দিল্লির ভোটে বিজেপির সঙ্গে জোট নিয়ে দু’দিন আগে ক্ষোভ জানান পবন। নীতীশকে খোলা চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘একান্ত বৈঠকে আপনি স্বীকার করেছিলেন, বর্তমান বিজেপি নেতৃত্ব কী ভাবে আপনাকে অপমান করেছিল। অকালির মতো দল নীতিগত কারণে যখন বিজেপির সঙ্গে জোট প্রত্যাখান করছে, তখন জেডিইউ কী ভাবে বিহারের বাইরে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ার সিদ্ধান্ত নিল?’’ আজ সেই অভিযোগের জবাবে দেন নীতীশ। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি তাঁকে (পবন) সম্মান করি। তবে তিনি যেখানে খুশি যেতে পারেন। কোনও আপত্তি নেই।’’
পবনকে কার্যত দরজা দেখিয়ে দিয়েছেন নীতীশ। অনেকের মতে, এর মাধ্যমে প্রশান্ত কিশোর ও অন্য বিক্ষুব্ধদেরও বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি। দলের পদাধিকারী হয়ে প্রশান্ত যে ভাবে বিজেপির কৌশলের বিরুদ্ধে সরব, তাতে একাধিকবার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে নীতীশকে। কারণ, বিহারে যা পরিস্থিতি, তাতে বিজেপির হাত না ধরলে নীতীশের চাপ বাড়বে। অন্য দিকে, গত এক বছরে পাঁচটি রাজ্যে ক্ষমতা হারিয়েছে বিজেপি। তাই বিহারে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপির কাছে নীতীশ ছাড়া বিকল্প নেই। তাই আগেভাগেই অমিত শাহ জানিয়ে রেখেছেন, নীতীশকে সামনে রেখেই বিহারে লড়বে এনডিএ।
এ সব করেও জেডিইউয়ের ভিতরের ক্ষোভ চাপা দেওয়া যাচ্ছে না। দ্বারভাঙা জেলার হায়াঘাটের বিধায়ক অমরনাথ গামি আজ বলেন, ‘‘জনভিত্তি ছাড়াই নীতীশ কুমার ১৫ বছর কুর্সি ধরে রেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের জন্য নীতীশ নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিতে পারেন। সিএএ, এনআরসি, এনপিআর— তাঁর কাছে এ সব কোনও বিষয়ই নয়। তার লক্ষ্য, যে ভাবে হোক চেয়ার ধরে রাখা।’’ জেডিইউয়ের মুখপাত্র সঞ্জয় সিংহ পাল্টা বলেছেন, ‘‘গামি অকৃতজ্ঞ।’’