—ফাইল চিত্র।
সেটা ২০০৬ সাল। বিমানবন্দর বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে কলকাতায় বাম আন্দোলনে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উড়ান পরিষেবা। তবে খোলা ছিল অফিস-কাছারি। চালু ছিল গণপরিবহণ।
১৪ বছর পরে, আজ শনিবার যেন সেই ছবিই অনেকটা ফিরে আসতে চলেছে। সৌজন্যে, শেষ মুহূর্তে লকডাউন তুলে নেওয়ার রাজ্য সরকারি সিদ্ধান্ত। তবে এ বার উড়ান পরিষেবা পুরো বন্ধ থাকছে না। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর, কলকাতা থেকে আজ শুধু এয়ার ইন্ডিয়ার হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুর উড়ান যাতায়াত করবে। বাকি সব উড়ান বাতিল।
রাজ্য প্রথমে জানিয়েছিল, শুক্র এবং শনিবার সার্বিক লকডাউন থাকবে। সেই মতো আগে থেকেই সব উড়ান সংস্থা তাদের উড়ান বাতিল করেছিল। রবিবার ভোর থেকে আবার পরিষেবা চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজ্য জানিয়ে দেয়, শনিবারের লকডাউন প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
এর পরে উড়ান সংস্থাগুলি তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে রাজি হয়নি। তাদের প্রশ্ন, শেষ মুহূর্তে তারা যাত্রী পাবে কোথায়? নতুন করে উড়ান-সূচিই বা তৈরি হবে কী ভাবে? ফলে আজ কলকাতা থেকে তাদের যাবতীয় উড়ান বাতিল থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, গো এয়ার এবং এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া। শুধু এয়ার ইন্ডিয়া বৃহস্পতিবার রাতেই হায়দরাবাদ ও বেঙ্গালুরুর উড়ানের টিকিট বিক্রি শুরু করেছিল। সংস্থা জানিয়েছে, ওই দুই উড়ানের বেশির ভাগ টিকিটই
বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
উড়ান সংস্থাগুলির দাবি, প্রথমত বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে টিকিট বিক্রি শুরু করলে হাতে গোনা কিছু শহরের যাত্রী পাওয়া যেত। দ্বিতীয়ত, নতুন করে উড়ান সূচি বানাতে হত। এই দু’টি বিষয়ই তাদের সদর দফতরের অনুমতি সাপেক্ষ। তাই প্রতিটি উড়ান সংস্থাই জানিয়ে দিয়েছে, শেষ মুহূর্তে উড়ান চালানোর চেয়ে বন্ধ রাখা ভাল। কারণ টিকিট বিক্রি শুরু করে যদি দেখা যেত যে মুষ্টিমেয় যাত্রী হয়েছে, তখন লোকসান সয়েও তাঁদের পৌঁছে দিতে হত গন্তব্যে।
একটি বেসরকারি উড়ান সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘দিল্লি-মুম্বইয়ের উড়ান চালানোর অনুমতি দিলেও না-হয় বোঝা যেত। সরকারের কাছে মৌখিক আবেদনও করা হয়েছিল। কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বের যতগুলি উড়ান রয়েছে, প্রধানত দিল্লি-মুম্বই থেকে যাত্রীরা কলকাতা ঘুরে সেগুলিতে যাতায়াত করেন। কিন্তু সরকার রাজি হয়নি।’’
এমনিতেই এখন কলকাতা থেকে নিয়মিত সব উড়ান চলছে না। সপ্তাহে তিন দিন (মঙ্গল, বৃহস্পতি, রবি) দিল্লি, মুম্বই-সহ ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান থাকছে। বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, বৃহস্পতিবার ওই ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান থাকায় সব মিলিয়ে ২১২টি উড়ান ওঠানামা করেছে। যাত্রী যাতায়াত করেছেন প্রায় ২৮ হাজার। সেই অর্থে আজ, শনিবার উড়ান চলার কথা ছিল বড়জোর ১৪০টি। তার জায়গায় যাতায়াত করবে সাকুল্যে চারটি। তবে শেষ মুহূর্তে এয়ার
ইন্ডিয়া আরও গোটা দুয়েক উড়ান চালালে সব মিলিয়ে আটটি উড়ান যাতায়াত করতে পারে।