Oxygen

অক্সিজেন বন্ধের সময়ে অচল ছিল সিসিটিভিও!

আচমকা হাসপাতালটির লাইসেন্স সাসপেন্ড হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন সেখানে ভর্তি রোগীদের পরিবারের সদস্যরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আগরা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২১ ০৭:০৩
Share:

ফাইল চিত্র।

হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের মধ্যে অক্সিজেন ছাড়া কারা বাঁচতে পারছেন আর কারাই বা পারছেন না, তা দেখতে পাঁচ মিনিটের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রেখে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন আগরার শ্রী পরশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! আর এই ‘মহড়ার’ বলি হতে হয় মুন্নি দেবী নামে এক প্রৌঢ়া-সহ ২২ জন করোনা আক্রান্তকে। এই প্রসঙ্গে এ বার এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন মুন্নি দেবীর কন্যা প্রিয়ঙ্কা। জানালেন, ঘটনার দিন রিসেপশন ডেস্ক-সহ হাসাপাতালের অর্ধেকেরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা নাকি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।

Advertisement

ঘটনার দিন হাসপাতাল থেকে তাঁদের অক্সিজেন সঙ্কটের কথা জানানো হয় বলে জানান প্রিয়ঙ্কা। তাঁর আরও অভিযোগ, মুন্নি দেবীকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এবং তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে বলে জানানো হলেও তাঁর গায়ে ইঞ্জেকশনের কোনও চিহ্নই ছিল না! প্রিয়ঙ্কার কথায়, ‘‘আমিও একটি হাসপাতালে কাজ করি। আমার মাকে কোভিড ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হলেও করোনার কোনও ওষুধই তাঁকে দেওয়া হয়নি। আমাদের যদিও ওষুধ কিনে চিকিৎসকের হাতে দিতে বলা হয়।’’ হাসপাতালের তরফে
এই চরম গাফিলতির অভিযোগে এ বার আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্তই নিয়েছেন প্রিয়ঙ্কা।

‘মহড়ার’ জেরে ২২ জন করোনা রোগীর মৃত্যুর ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই হাসপাতালটিকে সিল করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। ঘটনার পুর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জয় প্রতাপ সিংহ বলেন, ‘‘আগরার পরশ হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে ওই রিপোর্ট জমা পড়লে আগামী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’ দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান মেডিক্যাল অফিসার বীরেন্দ্র ভারতী এবং সঞ্জীব বর্মনকে আগামী দু’দিনের মধ্যে ওই তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় তাঁকে মহড়ার কথা স্বীকার করে নিতে দেখা গেলেও এখন হাসপাতালটির মালিক অরিঞ্জয় জৈনের দাবি, ‘‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। হাসপাতালে এ ধরনের কোনও মহড়াই চালানো হয়নি।’’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়ো অবশ্য তাঁর এখনকার দাবির বিরুদ্ধেই প্রমাণ দিচ্ছে। সেখানে অরিঞ্জয়কে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘মোদীনগরে অক্সিজেন সরবরাহে টান দেখা দিয়েছিল। রোগী কমানোর নির্দেশ এসেছিল।তবে অনেক পরিবারই রোগী ফিরিয়ে নিতে রাজি হচ্ছিল না। আমি তখন ভাবলাম, ‘মক ড্রিল’ করে দেখা যাক, অক্সিজেন ছাড়া কে কে বাঁচতে পারছেন। সকাল ৭ টা নাগাদ পাঁচ মিনিটের জন্য গোটা হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। বিষয়টি কেউ জানত না। দেখা যায়, সঙ্গে সঙ্গে ২২ জন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছেন। নীল হয়ে যাচ্ছেন। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই মারা যান তাঁরা।’’

তবে আচমকা হাসপাতালটির লাইসেন্স সাসপেন্ড হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন সেখানে ভর্তি রোগীদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের মধ্যেই একজন লাল কুমার চৌহান।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘দিন পনেরো আগে আমার এক আত্মীয় এখানে ভর্তি হন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। তা সত্ত্বেও ফাইল হাতে পেতে আমাদের ডিসচার্জের নথিতে সই করতে বলা হয়েছে। এখন রোগীকে কোথায় নিয়ে যাব বুঝতে পারছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement