বিরোধী শিবিরে সদ্য কিছুটা ছন্দপতন ঘটিয়েছেন অখিলেশ যাদব। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে হায়দরাবাদে গিয়ে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মধ্যপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির বিধায়ককে মন্ত্রী না-করা নিয়ে কংগ্রেসকে খোঁচাও দিয়েছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, ‘বুয়া’ মায়াবতীকে খুশি রাখার জন্যই এমন কথা বলছেন মুলায়ম-পুত্র। চাইছেন আসন নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে দর কষাকষি করে রাখতে।
নয়া অস্বস্তির কেন্দ্রবিন্দু যে চন্দ্রশেখর, তাঁকে নবীন পট্টনায়ক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউই তেমন গুরুত্ব দেননি। বস্তুত, বিরোধী জোটেরও সুর ছিল যে, বিশ্বাসযোগ্যতা খুইয়েছেন চন্দ্রশেখর। অনেকের সন্দেহ, নরেন্দ্র মোদীর দূত হিসেবেই ফেডারেল ফ্রন্টের হাওয়া তুলে বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরাতে নেমেছেন তিনি। গত কাল মোদীর সঙ্গে চন্দ্রশেখরের বৈঠকের পরে চন্দ্রবাবু নায়ডু বলেছিলেন, ‘‘তিনি কি মোদীকে (ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে) জানাতে গিয়েছেন?’’
এই চন্দ্রশেখরের সঙ্গে গত দু’দিনে দেখা করেননি মায়াবতী-অখিলেশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও অখিলেশ স্বাগত জানিয়েছেন ‘কেসিআর’-এর ফেডারেল ফ্রন্টকে। আর মধ্যপ্রদেশ নিয়ে বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, যারা আমাদের বিধায়ককে মন্ত্রী করেনি। ওরা সমাজবাদী পার্টির রাস্তা সাফ করে দিয়েছে।’’ ইঙ্গিত স্পষ্ট— এর পরে উত্তরপ্রদেশে যেন এসপি-বিএসপির থেকে বেশি আসন আশা না-করে কংগ্রেস। এসপি নেতার এই কথার পরে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহের বক্তব্য, ‘‘অখিলেশ কখনওই তাঁর দলের নেতাকে মন্ত্রী করার কথা বলেননি। কমল নাথ তো বেশ শ্রদ্ধা করেন তাঁকে।’’ উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রাজ বব্বর যদিও বলেছেন, ‘‘আমরা একসঙ্গেই লড়তে চাই। আলোচনা করেই দূরত্ব ঘোচাব।’’
এসপি সূত্রের দাবি, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসকে জোট করার কথা বলেছিলেন অখিলেশ। কিন্তু কংগ্রেসই রাজি হয়নি। ভোটের আগেই জোট হলে বিজেপিকে আরও বেশি আসনে হারানো যেত। তা সত্ত্বেও ভোটের পরে কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছে এসপি। কিন্তু শপথগ্রহণে না-গিয়ে মায়া-অখিলেশ বুঝিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস যেন বেশি আশা না-রাখে। উত্তরপ্রদেশে অমেঠী এবং রায়বরেলী ছাড়া কংগ্রেসকে আর কোনও আসন দিতে নারাজ এসপি। খুব বেশি দর কষাকষি হলে বড়জোর আরও তিনটি আসনের কথা ভেবে দেখবে।
দিল্লিতে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, মায়া-অখিলেশ দু’জনেই উত্তরপ্রদেশে এমন কোনও বার্তা দিতে চাইছেন না যে, তাঁরা কংগ্রেসের নেতৃত্বে চলছেন। মনে করছেন, এতে তাঁদেরই লোকসান হবে।
কিন্তু লোকসভা ভোট পর্যন্ত তাঁরা এই অবস্থানই বজায় রাখলে কংগ্রেসকেও বিকল্প ভাবতে হবে। কিন্তু তখনও জোটের স্বার্থ বজায় রাখবে কংগ্রেস। এমন আসনেই একলা লড়বে, যেখানে তারা বিজেপির উচ্চবর্ণের ভোটে থাবা বসিয়ে বিরোধী শিবিরের হাত শক্ত করতে পারে।