মথুরার শ্রীকৃষ্ণ মন্দির এবং শাহি ইদগাহ মসজিদ চত্বরে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। ফাইল চিত্র।
ঐতিহাসিক শাহি ইদগাহ চত্বরে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার জলাভিষেক এবং হনুমান চালিশা পাঠের কর্মসূচি ঘিরে মঙ্গলবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। ১৪৪ ধারা ভেঙে ইদগাহ চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করায় হিন্দু মহাসভার এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পুলিশ। আটক করা হয়েছে আরও ৭ জনকে।
অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের তিন দশক পূর্তির দিনে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা থাকায় এমনিতেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ইদগাহ চত্বরে (হিন্দুত্ববাদীদের ভাষায় শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমি) হিন্দু মহাসভার ‘লাড্ডু গোপাল কা জলাভিষেক’ এবং হনুমান চালিশা পাঠের কর্মসূচি ঘিরে গোটা এলাকায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। মোতায়েন করা হয় দেড় হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী ও আধিকারিককে।
মথুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মার্তণ্ড প্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ ভেঙে ইদগাহ চত্বরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করায় অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার আগ্রা শাখার প্রধান সৌরভ সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংগঠনের আরও ৭ জন নেতা-কর্মীকে আটক করে গৃহবন্দি করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।’’
প্রসঙ্গত, মথুরার প্রাচীর কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের গর্ভগৃহে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব। অভিযোগ, সেখানে শাহি ইদগাহ মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন তিনি।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের মতো শাহি ইদগাহেও রয়েছে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’। সেগুলির সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির দাবিতে ইতিমধ্যেই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে। সেই মামলায় রায় ঘোষণার আগেই ইদগাহ থেকে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’ নষ্ট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে অবিলম্বে পুরো চত্বরটি সিল করা এবং নমাজ বন্ধের দাবিতে মথুরা আদালতে দায়ের হয়েছে পৃথক মামলা।