(বাঁ দিকে) অজিত পওয়ার এবং শরদ পওয়ার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কাকা শরদ পওয়ারের প্রশংসা শোনা গেল ভাইপো অজিত পওয়ারের গলায়। সোমবার এনসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসে গত ২৪ বছর ধরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শরদকে ধন্যবাদ জানান অজিত। দলের সঙ্গে যুক্ত অন্যদেরও ধন্যবাদ জানান মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত।
অজিত দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বলেন, “দলকে শেষ ২৪ বছর ধরে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমি শরদ পওয়ারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।” ১৯৯৯ সালে দলগঠনের পর যাঁরা সঙ্গে রয়েছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানাই। তবে অজিতের এই শরদ-প্রশংসার মধ্যে অন্য তাৎপর্য দেখছেন কেউ কেউ। লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রের চারটি লোকসভা কেন্দ্রে লড়তে নেমে মাত্র একটি আসনে জয়ী হয়েছে অজিতের এনসিপি। বারামতীতে বোন তথা শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের বিরুদ্ধে স্ত্রী সুনেত্রা মহাজনকে দাঁড় করিয়েও আসন ছিনিয়ে আনতে পারেননি অজিত।
এই পরিস্থিতিতে এনডিএ মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রিত্বের জন্য তদ্বির করেও ব্যর্থ হতে হয় অজিতকে। বিজেপির তরফে অজিতকে একটি প্রতিমন্ত্রী পদ দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি তিনি। এই বিষয়ে ‘আপাতত ধৈর্য’ ধরার কথা বলেছেন শরদের ভাইপো। এনডিএ-র শরিক হওয়া সত্ত্বেও তাই ‘আপাতত’ এনসিপি-র কোনও প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নেই। বিজেপি অবশ্য বলছে, ভবিষ্যতে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হলে এনসিপির কথা মাথায় রাখা হবে। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রিত্ব নিয়ে ‘দাগা’ খেয়েই অজিত কাকার দিকে ঝুঁকছেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, শরদের প্রতি ইতিবাচক বার্তা দিয়ে বিজেপিকে চাপে রাখার কৌশল নিচ্ছেন অজিত।
২০২৩ সালের ২ জুলাই এনসিপিতে বিদ্রোহ ঘটিয়ে শরদের অমতেই বিজেপির হাত ধরেন অজিত। মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং বিজেপির জোট সরকারের শরিক হয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী হন। অজিতের বিদ্রোহের পরেই এনসিপির অন্দরের সমীকরণ বদলে গিয়েছিল। অজিত-সহ ন’জন বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়কের মন্ত্রিত্ব এবং ভাল দফতর লাভের পরে পরিষদীয় দলের অন্দরে ক্রমশ তাঁর শিবিরের পাল্লা ভারী হতে থাকে। সাংসদদের একাংশও তাঁর দিকে যান। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে দলের নিয়ন্ত্রণ যায় অজিতের হাতেই। নির্বাচনী প্রতীক ঘড়িরও দাবিদার হন অজিত। শরদের নেতৃত্বাধানী সাবেক এনসিপি পরিচিত হয় এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার) নামে।
লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরোলে দেখা যায়, দলে ভাঙন সত্ত্বেও আটটি আসনে জয়ী হয়েছে শরদের দল। চলতি বছরের শেষেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে অজিতকে ছেড়ে দলের বিধায়কেরা আবার শরদের গোষ্ঠীতে ভিড়বেন কি না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতিতে।