মুম্বইয়ের বান্দ্রায় অজিত পওয়ার গোষ্ঠীর সভা। ছবি: পিটিআই।
কাকা শরদ পওয়ার এবং ভাইপো অজিতের দ্বন্দ্বে ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়েছে এনসিপি। বহিষ্কার, পাল্টা বহিষ্কারের পালা শুরু হয়েছিল দু’দিন আগেই। বুধবার মুম্বইয়ে পৃথক সভায় হয়েছে শক্তিপ্রদর্শন। এ বার এনসিপির পতাকা এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’-র অধিকার দাবি করে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল অজিত গোষ্ঠী।
ভাইপোর এমন পদক্ষেপের সম্ভাবনা আগেই আঁচ করেছিলেন কুশলী মরাঠা রাজনীতিক শরদ। মঙ্গলবারই নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি হলফনামা দিয়ে ক্যাভিয়েট দাখিল করেছিল তাঁর শিবির। তাঁদের না জানিয়ে অজিত গোষ্ঠীকে যাতে একতরফা ভাবে এনসিপির নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’ দেওয়া না হয়, সে জন্যই কমিশনে হলফনামা দেওয়া হয়েছে।
সঙ্ঘাতের এই আবহেই বুধবার মুম্বইয়ে বৈঠক করে এনসিপির দুই গোষ্ঠী। নরিম্যান পয়েন্টে যশবন্ত রাও চহ্বাণ সেন্টারে শরদের বৈঠকে হাজির ছিলেন এনসিপির ১৩ বিধায়ক, ২ বিধান পরিষদ সদস্য এবং লোকসভা এবং রাজ্যসভার তিন জন করে সাংসদ। অন্য দিকে অজিত শিবিরের দাবি, তাঁদের বৈঠকে ৪০ জন বিধায়ক উপস্থিত হয়ে ১০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারের হলফনামায় সই করে সমর্থন জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপির বিধায়ক সংখ্যা ৫৩। দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতে অজিত গোষ্ঠীর প্রয়োজন দুই-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন।
শরদ গোষ্ঠী সূত্রের খবর, কোনও রাজনৈতিক দলে ভাঙনের সময় দলের পতাকা এবং নির্বাচনী প্রতীক বণ্টনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন কার্যত ‘বিচারবিভাগীয় ট্রাইব্যুনাল’-এর ভূমিকা পালন করে। যুযুধান দুই গোষ্ঠীর সমর্থক বিধায়ক, সাংসদ-সহ বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি এবং সাংগঠনিক পদাধিকারীদের তালিকা পরীক্ষা করে কয়েক দফার শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করে কমিশন।
কোনও গোষ্ঠীর গরিষ্ঠতা সম্পর্কে নিশ্চিত হলে তাদের নাম এবং প্রতীক ব্যবহারের অধিকার দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। সাম্প্রতিক কালে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার ভাঙনের সময় উদ্ধব ঠাকরের আপত্তি উড়িয়ে একনাথ শিন্ডের গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দিয়েছিল কমিশন। তামিলনাড়ুতে এডিএমকের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর গোষ্ঠী লড়াইয়ের সময়ও পন্নীরসেলভম গোষ্ঠীর দাবি খারিজ করে পলানীস্বামী গোষ্ঠীকে পতাকা এবং প্রতীক ব্যবহারের অধিকার দেওয়া হয়েছিল। শরদ বুধবার তাঁর সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘আমাদের হাত থেকে এনসিপির প্রতীক কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’’