রাজভবনে শপথ নিচ্ছেন অজিত পওয়ার (বাঁ দিকে)। শরদ পওয়ার (ডান দিকে)। —টুইটার।
শিবসেনার পর এ বার ভাঙন ধরল শরদ পওয়ারের দল এনসিপিতেও। ৯ জন বিধায়ককে নিয়ে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-বিজেপি জোট সরকারে যোগ দিলেন পওয়ারের ভাইপো তথা মহারাষ্ট্র বিধানসভার বিদায়ী বিরোধী দলনেতা অজিত পওয়ার। রবিবার মহারাষ্ট্রের রাজভবনে গিয়ে শপথ নেন অজিত-সহ অন্য এনসিপি নেতারা। মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন ছগন ভুজবল, দিলীপ ওয়ালসে পাতিল, অদিতি ঠাকরে, ধনঞ্জয় মুন্ডের মতো এনসিপি নেতারা। মহারাষ্ট্রের শাসক জোটের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, একনাথ শিন্ডে মন্ত্রিসভায় উপমুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন অজিত। সে ক্ষেত্রে দেবেন্দ্র ফডণবীসের পাশাপাশি দ্বিতীয় উপমুখ্যমন্ত্রী পেতে চলেছে মহারাষ্ট্র। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব পেতে চলেছেন অন্য এনসিপি বিধায়করাও।
এনসিপি সূত্রে খবর, সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না অজিত। তবে তাঁর সঙ্গে প্রায় ৪০ জন এনসিপি বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। বর্তমানে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপির ৫৩ জন বিধায়ক রয়েছেন। অজিতের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে তিনিই যে এনসিপির ‘প্রকৃত’ স্বত্বাধিকারী, আগামী দিনে তার প্রমাণ করার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন অজিত।
রবিবার নিজের বাসভবনে দলীয় বিধায়কদের একাংশকে নিয়ে বৈঠকে বসেন অজিত পওয়ার। ওই বৈঠকেই পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করেন অজিত। অবশ্য এই বৈঠক সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন দলের সভাপতি পওয়ার।
অজিতের সঙ্গে এনসিপি শীর্ষ নেতৃত্বের দূরত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছিল বেশ কয়েক দিন ধরেই। দল তাঁকে যে ভূমিকায় দেখতে চাইছিল, সেই ভূমিকা পালনে তিনি যে খুশি নন, তা-ও ঠারেঠারে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অজিত। অজিত সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে এনসিপির সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। মনে করা হচ্ছিল, তাঁকে দলের মহারাষ্ট্র শাখার সভাপতি করা হতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি দিল্লিতে এনসিপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের পোস্টার থেকে বাদ যায় অজিতের নাম এবং ছবি।
গত ১০ জুন নিজের ২৫তম জন্মদিবসে পওয়ার ঘোষণা করেন, তাঁর পরে দলের ভার যাবে কাদের হাতে। দেখা যায়, ভাইপো অজিতের নামগন্ধ সেখানে নেই। কার্যকরী সভাপতির পদ পেয়েছেন শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে এবং প্রফুল পটেল। জানা যায়, পওয়ার আপাতত এনসিপি সভাপতি পদেই থাকবেন। তাঁকে সভাপতিত্বে সহায়তা করবেন সুপ্রিয়া এবং প্রফুল।
২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের পরেও অজিত ‘বিদ্রোহী’ হয়েছিলেন। তাঁর সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। অজিত হন উপমুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এনসিপি পরিষদীয় দলে ভাঙন ধরাতে ব্যর্থ হয়ে ইস্তফা দিতে হয় তাঁদের দু’জনকে। এর পর অজিত আবার শরদের শিবিরে আশ্রয় নেন। তাঁকে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘাডী জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন শরদ। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রায় একই ভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করে অনুগামী শিবসেনা বিধায়কদের নিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। বিজেপির সমর্থন নিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি।