যোগী আদিত্যনাথ এবং আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। — ফাইল চিত্র।
ভোটের আগে তেলঙ্গানায় এ বার দানা বাঁধল নাম বদল ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাক্ষিণাত্যের ওই রাজ্যে বিজেপির প্রচারে গিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে রাজ্যের রাজধানীর নাম বদলে ভাগ্যনগর করবেন। ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি তীব্র প্রতিবাদ করলেন যোগীর ওই মন্তব্যের।
সোমবার মিমের প্রচারসভায় আসাদউদ্দিন বলেন, ‘‘প্রথমে ওদের (বিজেপি) প্রশ্ন করুন এই ‘ভাগ্যনগর’ কোথা থেকে এসেছে? জিজ্ঞাসা করুন, ওই নাম কোথায় লেখা হয়েছে? আপনি হায়দরাবাদকে ঘৃণা করেন। নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ সেই ঘৃণার প্রতীক।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, ভোটের আগে হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তন ঘিরে এই বিতর্কের জেরে মেরুকরণ তীব্র হতে পারে।
গত বছর বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে হায়দরাবাদকে ‘ভাগ্যনগর’ নামে চিহ্নিত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা শহরের নাম বদল নিয়ে বিতর্কে অক্সিজেন দিয়েছিল। তার আগে ২০২০-তে হায়দরাবাদ পুরসভার ভোটে প্রচার করতে সেখানে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। প্রচারে তিনি হায়দরাবাদকে ভাগ্যনগরে পরিণত করতে মানুষকে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও সে ভোটে হেরেছিল বিজেপি। এ বারও সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যোগী। বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস হায়দরাবাদ নাম দিয়েছিল। আমরা তা বদলে ভাগ্যনগর করব।’’
বিজেপি নেতৃত্বও বিধানসভা ভোটের প্রচারে খোলাখুলি নিজামশাহির শহরের নাম বদলের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সর্দার বল্লভভাই পটেল এই শহর থেকেই ‘এক ভারত’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং তেলেঙ্গানা বিজেপির সভাপতি জি কিসান রেড্ডি সোমবার জানান, তাঁর দল রাজ্যে ক্ষমতায় এলে হায়দরাবাদেপ নাম পরিবর্তন করে ‘ভাগ্যনগর’ করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘মাদ্রাজ, বম্বে এবং কলকাতার মতো শহরের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আর আমরা জানতে চাই, ‘হারদর’কে কাদের প্রয়োজন?’’ আগামী ৩০ নভেম্বর তেলঙ্গানা বিধানসভার ১১৯টি আসনেই এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে। গণনা আগামী ৩ ডিসেম্বর দেশের অন্য চার রাজ্য— মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং মিজ়োরামের সঙ্গে। কাগজে-কলমে বিআরএস, কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে ‘ত্রিমুখী’ লড়াই হলেও বিভিন্ন জনমত সমীক্ষার পূর্বাভাস মূল লড়াই হতে চলেছে কেসিআর এবং রাহুল গান্ধীর দলের মধ্যে।