প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
প্রধানমন্ত্রীর ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার প্রস্তুতিতে তুলির শেষ টানটি দিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা ঘুরে এলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর আজ সাংবাদিক বৈঠক করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার ডাক দিয়েছেন তিনি। জয়শঙ্করের বক্তব্য, সীমান্তে যাতে হত্যা এবং অপরাধের ঘটনা না-ঘটে অগ্রাধিকার দিয়ে দেখার দায়িত্ব রয়েছে দু’দেশেরই। পাশাপাশি ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর সম্ভাবনার দিকগুলিও উল্লেখ করেছেন তিনি। দেশে ফেরার আগে শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করে আসেন জয়শঙ্কর।
প্রশ্ন করা হয়, দু’দেশের সুসম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা হয় কেন? ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, “প্রকৃতপক্ষে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ভারতের অভ্যন্তরে ঘটে থাকে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা একমত যে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই দুঃখজনক। নিজেদের প্রশ্ন করেছি, সমস্যার মূল কারণ কী। আমাদের দুই পক্ষের অভীষ্ট লক্ষ্য হওয়া উচিত অপরাধবিহীন সীমান্ত, যেখানে হত্যাকাণ্ড ঘটবে না। আমার ধারণা, আমরা দুই পক্ষ এই সমস্যার সমাধান করতে পারব।” বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরে যে বিষয়টি অন্যতম গুরুত্ব পেতে চলেছে, তা হল দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো। জয়শঙ্করের কথায়, দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং মানুষে মানুষের সংযোগের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, “এমন কোনও ক্ষেত্র নেই, যেখানে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি না। যদি আমাকে
জিজ্ঞাসা করেন, ৫০ বছর পার হয়েছে গেছে এবং পরের ২০ বছর কী করা যেতে পারে, আমি বলব দু’দেশের সংযোগবৃদ্ধি। আমাকে আজ বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী, তাঁর প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) উদ্ধৃত করে বলেছেন, সংযুক্তি হচ্ছে উৎপাদনশীলতা। এটা একদম সত্য। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংযোগ বাড়ালে এই অঞ্চলের সামগ্রিক ভূ-অর্থনীতি পরিবর্তিত হয়ে যাবে। আমরা দু’পক্ষই বিশ্বাস করি, এটা সম্ভব।’
একটি প্রশ্নের উত্তরে তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি নিয়েও বলেছেন বিদেশমন্ত্রী। জানিয়েছেন, তিস্তা চুক্তি রূপায়ণে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং সেই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি। শীঘ্রই ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে জলবণ্টন নিয়ে দু’দেশের মধ্যে জলসম্পদ সচিব পর্যায়ে আলোচনা হবে।
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ভারতকে ধন্যবাদ দিয়েছেন কোভিড প্রতিষেধক পাঠানোর জন্য। জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে অধিকাংশ আলোচনা হয়েছে আজকের বৈঠকে। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে ঢাকা এবং নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে যাত্রিবাহী ট্রেন চালু করা হবে।