এমস-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
আরও ভয়ঙ্কর দিন আসছে? প্রায় তিন মাসের লকডাউনের পরেও ভারতে করোনা সংক্রমণের ঘটনা কমা তো দূরের কথাই, আগামী দু’/তিন মাসে কি তা শীর্ষে পৌঁছতে চলেছে?
এনডিটিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই আশঙ্কার কথাই জানিয়েছেন দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)’-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া।
রণদীপ বলেছেন, “এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ভারতে করোনা সংক্রমণের ঘটনা আরও বাড়তে চলেছে। আগামী দু’/তিন মাসে তা শীর্ষে পৌঁছতে পারে।’’
তবে জাতীয় স্তরে এই সংক্রমণ এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন এমস-এর অধিকর্তা। আগেও এমস-এর তরফে একই দাবি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন- মোট আক্রান্তে স্পেনকে টপকে বিশ্বে পাঁচ নম্বরে ভারত
আরও পড়ুন- ‘ভ্যাকসিন তৈরি, শুধু...’, চাপের মুখে ট্রাম্প-বার্তা
যদিও আগামী দিনে ভারতে গোষ্ঠী সংক্রমণের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি এমস-এর অধিকর্তা। রণদীপের কথায়, “দেশের যে যে এলাকাগুলিকে হটস্পট বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই সব এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণের যথেষ্টই আশঙ্কা রয়েছে।’’
এ দিকে, রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৯৭১ জন। এক দিনে নতুন আক্রান্তের সংখ্যায় এটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এই নিয়ে দেশে মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যাও পৌঁছে গেল প্রায় আড়াই লক্ষে। রবিবার সকালের হিসেবে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৪৬ হাজার।
রবিবারের এই আক্রান্তের পরিসংখ্যান সামনে আসার পর বিশ্বের করোনা আক্রান্ত দেশগুলির তালিকায় আরও এক ধাপ উপরে উঠে এল ভারত। এখন ভারতের স্থান পঞ্চম। ভারতের চেয়ে বেশি কোভিড আক্রান্ত রয়েছে মোট চারটি দেশে— আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া এবং ব্রিটেন। রবিবারের এই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে স্পেনেরও উপরে উঠে এল ভারত।
ভিন রাজ্যের করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত শয্যা হাসপাতালে নেই, এই অজুহাতে দিল্লির সীমানা বন্ধ করে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার, তাকে সমর্থন করেননি এমস-এর অধিকর্তা। রণদীপের কথায়, “এটা খুবই অনৈতিক। কেউ জোর করে দেশের কোনও রাজ্যের সীমানা আচমকা বন্ধ করে দিতে পারেন না।’’
তবে শুধুই আক্রান্ত নয়, উদ্বেগ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা নিয়েও। রবিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৮৭ জনের। এই নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৬,৯২৯। মৃতের তালিকায় এখনও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২,৬৬৯ জনের। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে গুজরাত (১,২১৯), দিল্লি (৭৬১), মধ্যপ্রদেশ (৩৯৯), পশ্চিমবঙ্গ (৩৮৩), উত্তরপ্রদেশ (২৫৭), তামিলনাড়ু (২৫১), রাজস্থান (২৩১) এবং তেলঙ্গানার (১২৩) মতো রাজ্য।