Himachal Pradesh Assembly Election

বেকারত্ব নিয়ে ক্ষোভই পদ্মের কাঁটা হিমাচলে

১৯৮৫ সাল থেকেই হিমাচলে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়ে আসছে। গত পাঁচ বছর বিজেপি ক্ষমতায়। স্বাভাবিক নিয়মে এবার কংগ্রেসের এগিয়ে থাকার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৮:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি, পুরনো পেনশন প্রকল্প ফেরাতে হবে। আন্দোলন চলছে। আপেল চাষিদের দাবি, সার, ছত্রাক নাশকের দাম বেড়েছে। জ্বালানির দাম বাড়ায় পরিবহণ খরচ বেড়েছে। অথচ আপেলের ঠিক মতো দাম মিলছে না। সুবিধা পাচ্ছে শুধু কৃষিপণ্য শিল্প সংস্থাগুলি। আপেল চাষিরা রাস্তায় নেমেছেন।

Advertisement

পঞ্জাব লাগোয়া জেলাগুলির সব পরিবারে কেউ না কেউ সেনায় কাজ করে। বেকার যুবকেরা সেনার চাকরি নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। মাত্র চার বছরের জন্য সেনায় নিয়োগের ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে তরুণদের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

শনিবার হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোটের এক সপ্তাহ আগে, গত শনিবার প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, পদ্মফুলে ছাপ দিলেই নরেন্দ্র মোদীকে ভোট দেওয়া হবে। তার বাইরে কোন কেন্দ্রে কে প্রার্থী— দেখার দরকার নেই। কিন্তু হিমাচলের ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই স্থানীয় সমস্যা বড় হয়ে উঠছে। আপেল চাষি থেকে বেকারদের ক্ষোভ, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য পুরনো পেনশন প্রকল্প ফেরানোর দাবির সঙ্গে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যাও ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও অমিত শাহ, জে পি নড্ডা, রাজনাথ সিংহ, যোগী আদিত্যনাথদের প্রচারে নামানো হয়েছে।

Advertisement

এ দিকে, সরকার বিরোধিতার হাওয়া নিজের পালে টেনে আনতে গিয়ে ছ’বারের মুখ্যমন্ত্রী, প্রয়াত বীরভদ্র সিংহের অভাব টের পাচ্ছে কংগ্রেস। ভোটের আগেই কংগ্রেসের মধ্যে একাধিক মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার উঠে এসেছেন।

১৯৮৫ সাল থেকেই হিমাচলে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়ে আসছে। গত পাঁচ বছর বিজেপি ক্ষমতায়। স্বাভাবিক নিয়মে এবার কংগ্রেসের এগিয়ে থাকার কথা। হিমাচলের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ, রাজ্যে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকারের বদলের প্রথা উল্টে দেওয়া। কংগ্রেস বলছে, ক্ষমতাসীন বিজেপি স্থানীয় সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে দিল্লির নেতাদের হিমাচলে প্রচারে নামিয়েছে। কেন্দ্রে-রাজ্যে বিজেপির ‘ডবল ইঞ্জিন’-এর সরকারের মাহাত্ম্য প্রচার করছে। হিমাচলের মানুষের ক্ষোভ তাতে মিটবে না।

স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ ধামাচাপা দিতে বিজেপি নিজের ইস্তাহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি-র আশ্বাস দিয়েছে এবং মহিলা ভোটারদের মন জিততে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে। কংগ্রেসের ইস্তাহারেও মহিলাদের জন্য রয়েছে নানা প্রতিশ্রুতি। কংগ্রেস নেতারা আশা করছেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য পুরনো পেনশন প্রকল্প ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ‘তুরুপের তাস’ হয়ে উঠতে পারে।

প্রয়াত বীরভদ্রের স্ত্রী প্রতিভা সিংহের হাতে হিমাচল কংগ্রেসের ভার। এদিকে, একাধিক মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার উঠে আসার ফলে কংগ্রেসের মধ্যেই অনেক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। প্রচারে গিয়ে অমিত শাহ কটাক্ষ করেছেন, ‘‘কংগ্রেসের সাত-আটজন মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। তবে চিন্তা নেই। বিজেপিই ফের ক্ষমতায় আসবে।’’ প্রতিভার দাবি, ‘‘বীরভদ্র সিংহ সবাইকে এককাট্টা করে এগোতেন। আমিও তাঁর পথেই চলার চেষ্টা করছি।’’

প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা দু’দিন প্রচারে গেলেও রাহুল গান্ধী হিমাচলে যাননি। ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, রাজস্থানের সচিন পাইলটকে বাদ দিলে মূলত স্থানীয় নেতাদের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, আম আদমি পার্টি হিমাচলের ভোটে নামলেও অরবিন্দ কেজরীওয়াল মূলত গুজরাতেই জোর দিচ্ছেন। ফলে হিমাচলে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের দ্বিমুখী লড়াই হবে। বিজেপি নেতাদের দাবি, হিমাচলের মানুষ কেন্দ্রে ও রাজ্যে বিজেপি সরকারের কাজ দেখে ভোট দেবেন। প্রতিভার পাল্টা দাবি, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি থেকে হিমাচলের স্থানীয় সমস্যাই ভোটের ফলাফল ঠিক করে দেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement