সংসদভবন চত্বরে ধর্নায় তৃণমূল সাংসদরা

দলনেত্রী এখন লন্ডনে। তবে তিনি না দেশে থাকলেও তাঁর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে সংসদভবনের মূল গেটের সামনের সিঁড়িতে ধর্নায় বসলেন তৃণমূল সাংসদেরা। সোমবার সকাল ১০ নাগাদ আধ ঘণ্টার এই ধর্না শেষে জানানো হয় মঙ্গলবারও একই ভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে। মোদী সরকারের সার্বিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৫ ১১:৩১
Share:

সংসদভবন চত্বরে তৃণমূলেল ধর্না।—নিজস্ব চিত্র।

দলনেত্রী এখন লন্ডনে। তবে তিনি দেশে না থাকলেও তাঁর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে সংসদভবনের মূল গেটের সামনের সিঁড়িতে ধর্নায় বসলেন তৃণমূল সাংসদেরা। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ আধ ঘণ্টার এই ধর্না শেষে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছিল, মঙ্গলবারও একই ভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হবে। কিন্তু প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের সম্মানে এই কর্মসূচি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোদী সরকারের সার্বিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই সম্প্রতি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Advertisement

এ দিন সকালে সংসদভবনের মূল গেটের সামনের সিঁড়িতে জড়ো হন তৃণমূলের সাংসদেরা। সরকারের সার্বিক দুর্নীতি এবং জমিবিল নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে সেখানে হাজির ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, দোলা সেন, সৌগত রায়, তাপস পাল, সন্ধ্যা রায়, রত্না দে নাগ-সহ অন্য তৃণমূল সাংসদেরা। তাঁদের গলাতে ছিল একটাই স্লোগান, ‘জমি বিল ফিরিয়ে নাও!’ অনেকের হাতে আবার মাটির ছোট ছোট হাঁড়ি এবং প্যাকেট রাখা ধান। তাঁরা হাঁড়িতে এক বার ধান রাখছেন, ফের সেই ধান প্যাকেটে ভরছেন। কেন? কাকলি-রত্নারা জানালেন, কৃষকের কাছে জমি না থাকলে ধান থাকবে না। আর ধান না থাকলে পেটের ভাত থাকবে না। সেটাই তাঁরা এই প্রতীকী ভাবনায় তুলে ধরেছেন। এ দিনের ধর্না কর্মসূচির দায়িত্ব মমতা দিয়েছিলেন লোকসভার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার এবং রাজ্যসভার নতুন সাংসদ দোলা সেনকে। ধর্নায় হাজির ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এই আওয়াজ কৃষকদের কাছে পৌঁছবে বলে আমার ধারণা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মনমোহন সরকারের আমলেও আমরা লড়েছি। এ বারও লড়ব।’’

চলতি বাদল অধিবেশনে এই প্রথম মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সংসদ চত্বরে সরব হল তৃণমূল। এর আগের অধিবেশনগুলিতে তৃণমূল নেতারা কালো কাপড়, লাল ডায়েরি, মাটির হাঁড়ি ইত্যাদি প্রতীক-সামগ্রি নিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তৃণমূলনেত্রীর এ বারের নির্দেশ, প্রকাশ্যে বিরোধিতা করলেও একটি লক্ষ্মণরেখা বজায় রেখে তা করতে হবে। এ বারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ এমন একটা সময়ে জানানো হচ্ছে, যখন তৃণমূল নেত্রী লন্ডনে রয়েছেন। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এমনটা সচেতন ভাবেই করা হয়েছে। তাদের অনুমান, তৃণমূলকে উগ্র বিরোধিতার লাইন নিতে দেখে যদি বিজেপি মমতার উপর পাল্টা চাপ বাড়াতেও চায়, নেত্রীর পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হবে যে তিনি যে হেতু দেশের বাইরে সেই মুহূর্তে ব্যস্ত ছিলেন, ফলে তাঁর পক্ষে ঘটনার নজরদারি সম্ভব ছিল না।

Advertisement

লক্ষ্মণরেখা যে একটা রয়েইছে, তা বোঝা গেল সংসদরে ভিতরে। আধ ঘণ্টার ধর্না শেষে তৃণমূল সাংসদেরা সেখানে ঢোকেন। এর পর কংগ্রেস-সহ অন্য একটি বিরোধী দল যখন ওয়েলে নেমে প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল, তৃণমূল সাংসদেরা তখন নিজেদের আসনেই বসেছিলেন। বিরোধিতার সুর চড়াতেও দেখা যায়নি তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement