সোমবার সকালে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চের সামনের দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দু’মাস অতিক্রান্ত হতে চলল। আরজি করের নির্যাতিতার বিচার, হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তার দাবিতে টানা আন্দোলন চলছে বাংলার জুনিয়র ডাক্তারদের। দুই দফায় কর্মবিরতির পর এ বার তাঁরা শুরু করেছেন আমরণ অনশন। বাংলার জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনে এ বার পাশে দাঁড়ালেন দিল্লি এমসের ডাক্তারেরাও। আগামী ৯ অক্টোবর আন্দোলনে সংহতি জানাতে মোমবাতি মিছিল করবেন দিল্লি এমসের রেসিডেন্ট ডাক্তারেরা। সেই দিনেই আরজি করের বিচারের দাবিতে আন্দোলন ২ মাসে পড়বে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় দিল্লির জওহরলাল নেহরু প্রেক্ষাগৃহের সামনে থেকে শুরু হবে তাঁদের মোমবাতি মিছিল।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকে টানা কর্মবিরতি শুরু করেছিলেন রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই প্রতিবাদ, আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়েছিল গোটা দেশের চিকিৎসক মহলে। বাংলার বাইরেও বিভিন্ন হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন। দিল্লি এমসেও ১১ দিন ধরে চলেছিল রেসিডেন্ট ডাক্তারদের কর্মবিরতি। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছিলেন তাঁরা।
রাজ্য সরকারের তরফে ইতিবাচক আশ্বাস পাওয়ার পর কাজে ফিরেছিলেন বাংলার জুনিয়র ডাক্তারেরাও। আংশিক ভাবে প্রত্যাহার করেছিলেন কর্মবিরতি। কিন্তু সাগর দত্ত হাসপাতালের ডাক্তারদের উপর হামলার ঘটনার পরে ফের পূর্ণ কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন তাঁরা। তবে তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। সিনিয়রদের পরামর্শে এবং রোগীস্বার্থ বিবেচনা করে কাজে ফেরেন তাঁরা। বদলে যায় আন্দোলনের পন্থা। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন। ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে এ বার মোমবাতি মিছিলের ডাক দিলেন দিল্লি এমসের রেসিডেন্ট ডাক্তারেরা।
এক বিবৃতিতে দিল্লি এমসের রেসিডেন্ট ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, তাঁরা নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে রয়েছেন। সরকার ও তদন্তকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তাঁদের এই ‘সাহসী সিদ্ধান্তকেও’ কুর্নিশ জানিয়েছেন এমসের রেসিডেন্ট ডাক্তারেরা।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বর্তমানে সাত জন জুনিয়র ডাক্তার আমরণ অনশন চালাচ্ছেন ধর্মতলায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পিডিটি অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, তনয়া পাঁজা এবং ক্যানসার বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট স্নিগ্ধা হাজরা বসেছেন অনশনে। এ ছাড়াও রয়েছেন এসএসকেএমের পিডিটি অর্ণব মুখোপাধ্যায়, এনআরএসের পিজিটি পুলস্ত্য আচার্য, কেপিসি হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা এবং আরজি করের অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের পিজিটি তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া অনিকেত মাহাতো।