ছবি: সংগৃহীত
কথায় বলে, অতি চালাকের গলায় দড়ি| স্মার্টফোন কোম্পানিগুলো অনেক কাল ধরেই আমাদের সঙ্গে সে রকমই কিছু চালাকি করে আসছে। তেমন কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা যাক আপনাদের সামনে।
1. Virtual Ram - অনেক বেশি RAM মানেই কিন্তু অনেক স্টোরেজ নয়। এখনকার সব ফোনেই ভার্চুয়াল Ram বলে একটা ফিচার দেওয়া হয়, যেটা আসলে ইন্টারনাল স্টোরেজ থেকেই একটু জায়গা নিয়ে র্যাম-এ বদলে নেওয়া হয়। ফলে তার স্পিড অনেকটাই কম। এর কারণে আপনার ফোনের পারফরম্যান্সে তেমন কোনও ইমপ্রুভমেন্ট দেখা যায় না কিন্তু সংস্থাগুলি এটাকেই অনেক বড় করে দেখায়।
2. IP Rating : এই যে কোম্পানিগুলো হাই IP রেটিং-এর কথা বলে, তা কিন্তু আমাদের বুঝতে ভুল হয়। এই আইপি রেটিং কিন্তু কখনওই আপনার ফোন জলে পড়লে নষ্ট হবে না, তার ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি দেয় না। এমনকি IP68 রেটিং থাকার পরেও আপনার ফোন যদি জলে পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়, তা হলেও সংস্থা কিন্তু কোনও রকম ওয়ারেন্টি দেবে না। সুতরাং আইপি রেটিং যাই থাক, কখনও ভুলেও ফোন জলে ভেজাবেন না । ফোনকে সাবধানে রাখুন। তা ছাড়া, ফোন হাত থেকে পড়া মানেই যে তার ডিসপ্লে বা অন্য কিছু নষ্ট হবে না, তারও সম্পূর্ণ গ্যারান্টি থাকে না ।
3. ক্যামেরা - ফোনের ক্যামেরার হাই মেগাপিক্সেল আছে মানেই যে আপনি অত্যন্ত উন্নত মানের ছবি পাবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই। অনেকেই জানেন, প্রাইমারি ক্যামেরা, আলট্রাভাইড ক্যামেরা ও টেলি ফটো সেন্সর ছাড়া কোনও ক্যামেরাই খুব একটা কাজের নয়| এই যে বাজেট ফোনের ডেপথ সেন্সর, ম্যাক্রো সেন্সর– এগুলো তেমন কোনও কাজেই লাগে না। সুতরাং বাজেট ফোন কেনার সময়ে দেখে নেবেন যে তার প্রাইমারি ক্যামেরা দিয়ে কেমন ছবি তোলা যাচ্ছে|
4. Network: সংস্থাগুলোর মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি দেখুন– যে অঞ্চলে ফাইভ জি-র পরিকাঠামো নেই, সেখানেই বেশি করে ফাইভ-জি মার্কেটিংয়ে জোর দেওয়া হয়।
5. অনেকেই ভাবেন, ওয়্যারলেস চার্জিং মানে তা অনেক বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি। তবে আমি বলব ইউজার ফ্রেন্ডলি হলেও এর কার্যক্ষমতা অনেক কম | ফোন খুব সময় নিয়ে চার্জ হয়। তার থেকেও বড় কথা, অনেক সময়ে ফোন বাড়তি গরম হয়ে যায়। ফলে তার ব্যাটারির উপর কিন্তু প্রভাব পড়ে|
এ তো গেল পারফরম্যান্সের কথা| এ বার যদি স্পেসিফিকেশনের কথা ওঠে, তবে প্রথমেই বলতে হবে হাই কোর প্রসেসর মানেই সব সময়ে বেটার পারফরম্যান্স, এমনটা না-ও হতে পারে | অন্যদিকে লার্জ ব্যাটারি ক্যাপাসিটি মানেই যে আপনার ফোন খুব ভাল পারফরম্যান্স দেবে, তা নয়| দিনের শেষে সফটওয়্যার অপটিমাইজেশনটাই আসল| তা হলে এর পরে ফোন কিনতে গেলে হাই মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, ওয়্যারলেস চার্জিং, লার্জ ক্যাপাসিটি ব্যাটারি– এ সবের পিছনে মরীচিকার মতো না ছুটে অবশ্যই তার সফটওয়্যার অপটিমাইজেশনটা দেখে নেবেন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।