—ফাইল চিত্র।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে উত্তর সিকিমের একটি বড় অংশ যে ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল, তাতে প্রতিবেশী দেশ চিন লাগোয়া সীমান্ত নিয়ে ভাবনা কিছুটা হচ্ছিল। তবে সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল বলেই দুর্যোগের দু’দিনের মাথায় সেনাবাহিনীর তরফে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনা সূত্রের খবর, সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ (জিওসি) লেফটেনান্ট জেনারেল আরপি কলিতা এবং উত্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত ত্রিশক্তি কোর-এর জিওসি লেফটেনান্ট জেনারেল ভিপিএস কৌশিক গত শুক্রবার হেলিকপ্টারের সিকিমের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা-সহ বিভিন্ন দিক পরিদর্শন করেন।
সীমান্তে মোতায়েন সেনাবাহিনীর জওয়ানদের পরিস্থিতি, তাঁদের রসদ এবং জরুরি পরিকাঠামো স্বাভাবিক ও সুরক্ষিত রয়েছে বলে কেন্দ্রকে পাঠানো রিপোর্টে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর। পূর্ব সিকিমের নাথু লা, ডোকলামের মতো সীমান্ত এলাকা বরাবর ‘স্পর্শকাতর’ বলেই পরিচিত। উত্তর সিকিমের এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে পূর্ব সিকিমের সীমান্ত এলাকায় যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে তা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেনার এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘সীমান্তে আমরা সজাগ রয়েছি। চিন সীমান্তের সিকিম পুরোপুরি সুরক্ষিতই রয়েছে।’’
সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, বাহিনীর কাছে এখন সবচেয়ে বেশি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। সিকিমের ‘লাইফলাইন’ বলে পরিচিত এক মাত্র জাতীয় সড়ক ধরেই শিলিগুড়ি, সুকনা, সেবক, শালুগাড়ার মতো উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন সেনা ছাউনি থেকেই বাহিনীর নিয়মিত গতিবিধি। তাতে রসদ থেকে রেজিমেন্টের বাহিনী বদল, জওয়ানদের আনা-নেওয়া, অস্ত্র মজুতের মতো নানা বিষয় রয়েছে। সেনা রিপোর্টে জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পার ধরে সিকিমের ‘লাইফলাইন’ একেবারেই ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা ও সেতু উড়ে গিয়েছে। তবে রংপো থেকে সিংটামের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের চেষ্টা চলেছে। গ্যাংটকে পূর্ব সিকিমের বিকল্প রাস্তা দিয়ে যোগাযোগ রয়েছে। দক্ষিণ এবং পশ্চিম সিকিমের রাস্তাও ঠিক আছে। দুর্যোগে বারদাং-সহ বিভিন্ন সেনা শিবিরে তলিয়ে যাওয়া সরঞ্জাম, গাড়ি ও অস্ত্রের খোঁজ চলছে। তবে এখনও খোঁজ মেলেনি ১৪ জন জওয়ানের। এ জন্য ‘লাইফ ডিটেক্টর রেডার, রিকো রেডার, ড্রোন, সেনার প্রশিক্ষিত কুকুরদের নামানো হয়েছে। ৩৯টি খোয়া যাওয়া গাড়ির মধ্যে ১৫টির খোঁজ মিলেছে। তিস্তার নীচের অংশে বহু জায়গায় অস্ত্র, সরঞ্জাম মিলছে এখনও।
রবিবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র সিকিমের ক্ষতিগ্রস্ত মঙ্গনের কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘সিকিমের সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী টানা নজরদারি করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিকে স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া পুরোদস্তুর চালু হয়ে গিয়েছে।’’