—প্রতীকী চিত্র।
নিজেরই বাবার বিরুদ্ধে তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন মেয়ে। সেই অপরাধে ‘অভিযুক্ত’কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। নিম্ন আদালতের বিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় বাবার। প্রায় এক যুগ হাজতবাসের পর সেই অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন বাবা। মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে তাঁকে বেকসুর খালাস করে দিল উচ্চ আদালত।
ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের। ২০১২ সালের মার্চে তাঁর মেয়েকে জোর করে বাড়ির পাশের একটি কুঁড়েঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বাবার বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘নিগৃহীতা’ তাঁর দাদুকে সমস্ত কথা খুলে বলেন। এর পর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ‘অভিযুক্ত’কে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ধর্ষণ) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক ভয় দেখানো) ধারায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সেই মামলাতেই নিম্ন আদালত ‘নিগৃহীতা’র বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করে। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ‘অভিযুক্ত’। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, মেয়েকে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বাধা দিয়েছিলেন বাবা। তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগে মামলা দায়ের করেন তিনি।
গত ২৫ জানুয়ারি ‘অভিযুক্ত’কে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের বিচারপতি সুজয় পল এবং বিবেক জৈনের একটি বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত আবেদনকারী ২০১২ সালের ২১ মার্চ থেকে এতদিন পর্যন্ত হেফাজতে ছিলেন৷ বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’’
অভিযুক্তের আইনজীবী বিবেক আগরওয়াল আদালতকে জানান, নিম্ন আদালতে পাল্টা জেরার সময় অভিযোগকারিণী স্বীকার করেছিলেন যে তাঁর বাবা তাঁর সঙ্গে কোনও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেননি। তবে তিনি যে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন তাতে তিনি আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু পরে একেবারে ‘ইউ-টার্ন’নিয়ে বিবৃতি বদলে ফেলেন তিনি, যার ফলে আদালতে অভিযুক্ততে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা ঘোষণা করে।
হাই কোর্ট অভিযোগকারিণীর বক্তব্য পর্যালোচনা করার পরে জানিয়েছে, তিনি স্বীকার করেছেন যে একটি ছেলের সঙ্গে তাঁর মানসিক এবং শারীরিক সম্পর্ক ছিল। তাঁর বাবা তাঁকে বহু বার সেই ছেলেটির সঙ্গে কথা বলতে দেখে ফেলেছিলেন। সেই কারণে মেয়েকে বকাবকি করতেন তিনি। এর পরেই তিনি প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও স্বীকার করেছেন যে বাবা তাঁর সঙ্গে কোনও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেননি। সেই সম্পর্ক শুধুমাত্র প্রেমিকের সঙ্গেই ছিল বলে মেনে নিয়েছেন তিনি।
হাই কোর্টের কথায়, এটি দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার যে তাঁর বিবৃতিকে অকাট্য বলা যায় না। এর পরেই অভিযুক্তকে মুক্তি দিয়েছে আাদালত।