প্রতীকী ছবি।
নির্বাচিত সরকারের তুলনায় দিল্লির উপরাজ্যপালের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা তুলে দেওয়ার বিতর্কিত বিলে রবিবার সই করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এই সইয়ের পরই ‘দ্য গভর্মেন্ট অব ন্যাশনাল ক্যাপিটল টেরিটরি অব দিল্লি (সংশোধিত) বিল’ আইনে পরিণত হল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঘোষণা করলেই দিল্লিতে জারি হয়ে যাবে ওই বিতর্কিত আইন। আর আইন চালু হলেই দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতার বড় একটা অংশ চলে যাবে দিল্লির উপরাজ্যপালের হাতে।
২২ মার্চ লোকসভার পর ২৪ মার্চ রাজ্যসভায় পাশ হয়েছিল এই জিএনসিটিডি বিল। দিল্লির শাসকদল আম আদমি পার্টি, কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল এই বিলের প্রতিবাদ করে সে দিন রাজ্যসভায় ওয়াকআউট করে। আপত্তি সত্ত্বেও সাম্প্রতিক অতীতের অন্যান্য বিলের মতো প্রায় বিনা বাধায় পাশ হয়ে যায় বিলটি।
রাজনীতিবিদদের একটা বড় অংশের মতে, এই বিল আইনে পরিণত হওয়ায় সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবালের সরকারকে। ২০১৩ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসায় পর থেকেই উপরাজ্যপালের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে দিল্লি সরকার। এই আইন পাশ হওয়ার পর সেই সংঘাত আরও বাড়বে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। কারণ এই আইন অনুসারে, দিল্লির ‘সরকার’ বলতে উপরাজ্যপালকেই বোঝাবে। এর পর থেকে কোনও নির্বাহী পদক্ষেপ নিতে হলে উপরাজ্যপালের পরামর্শ নিতে হবে দিল্লির নির্বাচিত সরকারকে।
যদিও এই বিলকে ইতিমধ্যেই অসাংবিধানিক অ্যাখ্যা দিয়েছেন বিরোধীরা। আম আদমি পার্টির অভিযোগ নির্বাচিত সরকারকে এড়িয়ে দিল্লির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে আরও বেশি করে নেওয়ার জন্যই কেন্দ্রের এই ‘অসাংবিধানিক’ বিল। ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দমন’ করা এই বিলের অন্যতম উদ্দেশ্য বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিংভি সাংসদে এই বিলের প্রতিলিপি ছিঁড়ে বলেছিলেন, ‘‘ভুল করবেন না বন্ধুরা। এ বিল শুধু কংগ্রেস, আপ বা বিজেপি সংক্রান্ত নয়। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মৌলিক কাঠামোয় আঘাত আনা হচ্ছে। আপনি যদি উপরাজ্যপালকে সরকার বানিয়ে দেন তা হলে নির্বাচনের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার কোনও দরকার থাকল না। তাই এই বিল সংবিধান বিরোধী।’’