Dalit woman

হাথরসের পর বলরামপুর, ফের গণধর্ষণের জেরে উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু দলিত মহিলার

‘‘আমাকে বাঁচাও, আমি মরতে চাই না।’’— ধর্ষণের পর এ রকমই আকুতি জানিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের বলরামপুরের ২২ বছরের দলিত যুবতী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০৮:৩২
Share:

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

হাথরসের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের গণধর্ষণের জেরে মৃত্যুর ঘটনা উত্তরপ্রদেশে। এ বার বার লখনউ থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে বলরামপুরে লালসার শিকার ২২ বছরের এক দলিত যুবতী। নির্যাতনের পর তিনি যখন বাড়ি ফেরেন তখন তাঁর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন। ঠিক মতো দাঁড়ানোরও ক্ষমতা ছিল না তাঁর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। বুধবার ঘটনার কথা জানানো হয়েছে পুলিশের তরফে।

Advertisement

ওই দলিত যুবতী একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। নির্যাতিতার মা জানিয়েছেন, সকালে কাজে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তার পর থেকে মোবাইলেও পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় হয়ে গেলেও মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। কাজে যাওয়ার পথেই দলিত যুবতীকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর মা। এর পর রিক্সা করে মেয়েকে বাড়ি ফিরতে দেখেন তাঁরা। তখন সে না পারছে হাঁটতে, না পারছে ঠিক মতো কথা বলতে। তাঁর মা বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ে কাঁদছিল আর বলছিল, ‘আমাকে বাঁচাও, আমি মরতে চাই না’।’’

এর পর তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে লখনউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন সেখানকার চিকিৎসা। লখনউ নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

আরও পড়ুন: হাথরসে গণধর্ষিতা দলিত তরুণীর দেহ না-দিয়ে পুড়িয়ে দিল পুলিশ

ঘটনার নিয়ে বলরামপুরের পুলিশ সুপার রঞ্জন বর্মা বলেছেন, ‘‘গিয়স্রি থানায় ঘটনা নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মহিলার পরিবারের লোক জানিয়েছেন মঙ্গলবার মধ্যরাত অবধি বাড়ি ফেরেনি যুবতী। তাঁকে ফোনেও পাচ্ছিলেন না। পরে যুবতী গভীর রাতে রিক্সা করে বাড়ি ফেরে। তখন তাঁর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কিন্তু বুধবার স্থানান্তরিত করার সময় পথেই মৃত্যু হয়।’’ এই ঘটনার জেরে দু’জন যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার। ওই পুলিশ অফিসার আরও বলেছেন, ‘‘ধর্ষণের পর নির্যাতিতাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্তরা। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হলে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে রিক্সায় চাপিয়ে নির্যাতিতাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।’’ ওই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাদের নাম শাহিদ ও সাহিল। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দলির যুবতীর দেহে একাধিক আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। কিন্তু মেয়েটির হাত-পা ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে বলে যে বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছিল তা নস্যাৎ করা হয়েছে পুলিশের তরফে।

আরও পড়ুন: দেশে রোজ ৮৭টি ধর্ষণ! বেড়েছে শিশু ও মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনাও

ঘটনার কথা সামনে আসতেই যোগী প্রশাসনকে এক হাত নিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। হাথরসের ঘটনা নিয়েও বিরোধীরা তোপের মুখে পড়েন উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

এনসিআরবি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দেশের মধ্যে কী ভাবে বাড়ছে শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনা। তথ্য বলছে, দেশে রোজ ৮৭ জন মহিলা ধর্ষণের শিকার হন। হাথরস নিয়ে যখন এত আলোচনা চলছে, তখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটছে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা। বুধবারই ২০ বছরের যুবক ধর্ষণ করেছে আট বছরের শিশুকে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। অন্য একটি ঘটনায়, বুলন্দশহরে প্রতিবেশী যুবক ধর্ষণ করেছে ১৪ বছরের নাবালিকাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement