বৃহস্পতিবারের পর আবার শুক্রবার শ্রদ্ধা ওয়ালকরের খুনে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুণাওয়ালার পলিগ্রাফ পরীক্ষা করেছেন ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির আধিকারিকেরা। —ফাইল চিত্র।
আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে শ্রদ্ধা ওয়ালকরের খুনে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুণাওয়ালার পলিগ্রাফ পরীক্ষার ফলাফল তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেবেন বলে জানিয়েছেন দিল্লির ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) আধিকারিকেরা।
এফএসএল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় টানা আট ঘণ্টা প্রশ্নোত্তর পর্বে আফতাবকে হিন্দি ভাষায় হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু আফতাব জবাব দিয়েছিলেন ইংরেজি ভাষায়। বৃহস্পতিবারের পর আবার শুক্রবার পলিগ্রাফ পরীক্ষা করেছেন ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির আধিকারিকেরা। প্রশ্নোত্তর পর্বের পরের দফা শুরু হয় শুক্রবার বিকেল ৪টেয়। প্রায় ৩ ঘণ্টার কাছাকাছি এই প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে।
ল্যাবরেটরির আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, পলিগ্রাফ পরীক্ষা সংক্রান্ত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে এই পরীক্ষার ফলাফল তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বলেছেন, ‘‘আমাদের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা আফতাবের জবাবের প্রেক্ষিতে একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন, যদি আশানুরূপ ফল না পাওয়া যায়, তবে আবার আফতাবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে। রিপোর্টে কী আসবে, তার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
পলিগ্রাফ পরীক্ষা চলাকালীন খুন সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন করা হয়েছিল আফতাবকে। শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁর কেমন সম্পর্ক ছিল, কেন আফতাব খুনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, শ্রদ্ধাকে খুন করার সময় কোনও হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন আফতাব— সব বিষয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল অভিযুক্তকে।প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন আফতাবের রক্তচাপ ওঠানামা পর্যবেক্ষণ করে নির্ধারণ করা হবে তিনি সত্যি বলেছেন না মিথ্যা। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত তদন্তে আফতাব সহযোগিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার এই পলিগ্রাফ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আফতাব জ্বরে ভুগছিলেন বলে সে দিন তাঁর পরীক্ষা করা যায়নি। বৃহস্পতিবারের পলিগ্রাফ পরীক্ষার সময় তিনি সহযোগিতা করলেও অতিরিক্ত হাঁচির কারণে কিছু রেকর্ডিং পরিষ্কার হয়নি। তাই আবার শুক্রবার পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছিল আফতাবকে।
১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাব আমিন পুণাওয়ালার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, খুনের পর তিনি শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করেছিলেন। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কিনেছিলেন নতুন ফ্রিজ। পরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে এসেছিলেন আফতাব বলে অভিযোগ। শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ ১২ নভেম্বর শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে।