নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও। ছবি সংগৃহীত।
আফস্পা প্রত্যাহার সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। রাতারাতি আফস্পা তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। রাজ্য জুড়ে আফস্পার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ চলাকালীন এই কথা জানালেন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও। মন জেলার ওটিংয়ে কমান্ডোদের গুলিতে ১৩ জন গ্রামবাসীর মৃত্যুর পরে অবিলম্বে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সব পক্ষ। রাজ্য সরকারও সর্বসম্মত ভাবে এই দাবি কেন্দ্রের কাছে পেশ করেছে। শান্তি আলোচনায় থাকা এনএসসিএন আইএম জানিয়েছে, আফস্পা জারি থাকলে আলোচনা চালিয়ে লাভ নেই। আফস্পা প্রত্যাহারে কমিটি গড়েছে কেন্দ্র। কিন্তু রিও বলেন, “আফস্পা রাজ্য বা কেন্দ্র হঠাৎ প্রত্যাহার করতে পারে না। সংসদে পাশ হওয়া আইন প্রত্যাহারে সময় প্রয়োজন।”
উত্তর-পূর্বে এখন সমগ্র অসম, নাগাল্যান্ড, ইম্ফল বাদে মণিপুর ও অরুণাচলের তিন জেলায় আফস্পা বলবৎ রয়েছে। রিও বলেন, “কেন্দ্রের তৈরি কমিটি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। যে সব এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বা নাশকতার সমস্যা নেই সেখান থেকে ধাপে ধারে আফস্পা তুলে নেওয়া হতে পারে।”
এ দিকে ওটিং হত্যাকাণ্ড নিয়ে তৈরি রাজ্য সরকেরের বিশেষ তদন্ত দল (সিট) যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তা প্রকাশ করার দাবি তুলেছে বিভিন্ন সংগঠন। রিও জানান, এই ধরনের রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা যায় কি না- তা তিনি খতিয়ে দেখবেন। মনের হত্যাকান্ডের তদন্ত রাজ্য সরকারের তৈরি বিশেষ তদন্তদল বা সিট তাদের প্রাথমিক রিপোর্ট রাজ্য সরকারকে জমা দেওয়ার পর থেকেই রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি উঠেছিল। এই পরিস্থিতিতে প্রথম বার সিটের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করা হল বৃহস্পতিবার। জানানো হল, জখম ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ। অনেকের কল রেকর্ডও যাচাই করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেও অনেকের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। গুয়াহাটি ও হায়দরাবাদের ফরেন্সিক ল্যাবের গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট এলে চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতকে জমা দেওয়া হবে। সিটের সদস্য, নাগাল্যান্ডের এডিজিপি সন্দীপ তামগাডগে বলেন, “জনতার কাছে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ জোগানোর অনুরোধ করা হয়েছিল। তেমন অনেক তথ্য পেয়েছে সিট। মন, অসম, ডিমাপুর ও অন্যান্য স্থানে তদন্ত চলেছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তদন্ত চালানো হয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট কবে দেবে এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা বিশেষ অনুরোধ করেছি, যাতে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়া হয়।”
সেনাবাহিনীও ঘটনা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। সেনাপ্রধান এম এম নরবণে বুধবার জানিয়েছেন, তাঁদের তদন্তও এক-দু’দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে নিহতদের পরিবার পিছু ১১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা হলেও বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চ দাবি তুলেছে নিহতদের পরিবার পিছু ১ কোটি টাকা ও জখমদের ৫০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রিও জানান, এই দাবির বিষয়টি তিনি কেন্দ্রকে জানিয়েছেন।