ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের পরে এক বছরের বেশি পেরিয়ে গিয়েছে। নতুন লোকসভা গঠনের পরে ৪৫০ দিন অতিক্রান্ত। কিন্তু এখনও লোকসভার ডেপুটি স্পিকারের পদ খালি। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী আজ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছেন, বাদল অধিবেশনেই যেন ডেপুটি স্পিকার পদের নির্বাচন হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশন। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন মনে করিয়ে দিয়েছেন, সংসদীয় রীতি মেনে চললে ডেপুটি স্পিকারের পদটি প্রধান বিরোধী দলেরই পাওয়ার কথা।
কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী মঙ্গলবারই এই অভিমত জানিয়েছেন যে, হার নিশ্চিত হলেও লোকসভায় ডেপুটি স্পিকার ও রাজ্যসভায় ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে কংগ্রেস-সহ বিরোধী জোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত। লোকসভায় কোনও ভাবেই বিরোধী জোটের প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা নেই। অধীর আজ স্পিকারকে চিঠি লিখে বলেছেন, ঐকমত্য বা নির্বাচনের মাধ্যমে ডেপুটি স্পিকারের পদ পূরণ করা সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা। রীতি অনুযায়ী, এই পদটি বিরোধী দলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এক বছর কেটে গিয়েছে। ডেপুটি স্পিকার পদ পূরণ হয়নি। তাই দেরি না করে বাদল অধিবেশনেই ডেপুটি স্পিকার বাছাই করা হোক।
ডেরেক মনে করিয়ে দিয়েছেন, ১৯৭৭-এ প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই বিরোধী দল কংগ্রেসকে ডেপুটি স্পিকারের পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন। ১৯৮০, ১৯৮৪-তেও বিরোধীদের ডেপুটি স্পিকারের পদ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৮-এ বাজপেয়ী সরকারের বিজেপি-জোট নিজের প্রার্থী রীতা বর্মাকে ডেপুটি স্পিকার পদের জন্য দাঁড় করাতে চেয়েছিল। বিরোধী দল কংগ্রেস পি এম সইদকে প্রার্থী করতে চায়। সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঠে নামেন। তাঁর উদ্যোগেই সরকার সঈদকে ডেপুটি স্পিকারের পদ ছেড়ে দেয়। ডেরেকের মন্তব্য, “বর্তমান সরকার এ থেকে শিক্ষা নিতে পারে। কিন্তু সংসদে বিরোধীদের জন্য কোনও জায়গা ছাড়তে বিজেপির অরুচির কথা সকলেই জানে।” নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহের নাম না-করে ডেরেকের কটাক্ষ, “ডেপুটি স্পিকারের পদ ৪৫০ দিন খালি রয়েছে। ইতিহাসে অভূতপূর্ব। এটা একটা সাংবিধানিক পদ। কিন্তু আমদাবাদ থেকে দিল্লিতে আসা দুই ভদ্রলোক শেষ কবে ভারতের সংবিধান নামের বইটি পড়েছেন!’’
ডেপুটি স্পিকারের পদে নির্বাচন ঘোষণা না হলেও রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। রাজ্যসভায় কী ভাবে দূরত্ব বজায় রেখে সাংসদরা বসবেন, চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুর উপস্থিতিতে তার মহড়াও হয়ে গিয়েছে। বিরোধী জোটের তরফে ডিএমকে-র তিরুচি শিবাকে প্রার্থী করার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু বিরোধীদের জায়গা ছাড়তে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। বুধবারই এনডিএ জোটের তরফে জেডিইউ নেতা হরিবংশ ফের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
বিজেপি নেতাদের হিসেবে, ২৪৫ আসনের রাজ্যসভায় এনডিএ-র কাছে ১১৬ জন সাংসদ রয়েছেন। তার পরেও বিজেডি-র ৯ জন, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ৬ জন ও তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির ৭ জন সাংসদ হরিবংশকে সমর্থন করতে পারেন। ফলে বিরোধী জোটের প্রার্থীর জেতার কোনও সম্ভাবনা নেই।