অভিনেত্রী আইমি বরুয়া। ছবি: সংগৃহীত।
অভিনেত্রী আইমি বরুয়ার পরিচালিত প্রথম ছবি সেমখোর দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। প্রদর্শিত হয়েছে কান চলচ্চিত্র উৎসবেও। কিন্তু প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ডিমাসা ভাষার এই ছবি নিয়ে এখন বিতর্ক ও বিক্ষোভ তুঙ্গে। সেমখোরে ডিমাসা সংস্কৃতি, সমাজ, ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে বিতর্কিত ভাবে দেখানো হয়েছে বলে দাবি করে বিভিন্ন ডিমাসা সংগঠন বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়ে নিলেন আইমি।
ডিমাসা সমাজ সম্পর্কে ভুল বার্তা দেওয়া ও ডিমাসাদের মধ্যে কখনও প্রচলিত না থাকা কন্যাভ্রূণ হত্যার ঘটনা সিনেমায় দেখানোয় আইমি বরুয়ার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা করেছেন অল ডিমাসা স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রাক্তন সভাপতি মহেন্দ্র কেম্প্রাই। মহেন্দ্রের দাবি, এই ছবিতে ডিমাসা সমাজ, ইতিহাস, সংস্কৃতিকে ভুল ও নেতিবাচক ভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে। সেমসা জনগোষ্ঠীর উপরে ভিত্তি করে এই ছবি। তাদের মধ্যে এখন তো নয়ই, অতীতেও কখনও কন্যাভ্রূণ হত্যা প্রচলিত ছিল না। ছবিতে যে ভাবে ডিমাসাদের মধ্যে কুসংস্কার, শিশু বিবাহের ঘটনা দেখানো হয়েছে তাও সত্য নয় বলে মহেন্দ্র দাবি করেন। বিভিন্ন ডিমাসা সংগঠন, ডিমাসা মহিলা সংগঠনের দাবি, আইমি নিজে বিখ্যাত হতে ও বাণিজ্যিক সাফল্য পেতে সেমসাদের বিষয়ে গভীরে না জেনেই মিথ্যে গল্প পর্দায় তুলে এনেছেন। যা ডিমাসাদের আবেগ ও সম্মানে আঘাত করছে। বৃহস্পতিবারেও সেমখোর ও আইমির বিরুদ্ধে হাফলংয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করে যৌথ মঞ্চ। ছবিটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি তোলেন প্রতিবাদকারীরা।
কোণঠাসা আইমি এত দিন চুপ থাকার পরে এ বার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন, ‘‘কিছু সংবাদপত্র, পত্রিকা, প্রবন্ধ ও কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেমখোরের কাহিনি ও চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু এর কাহিনি সব দিক থেকেই কাল্পনিক। কারও আবেগ, সংস্কৃতিকে আঘাত দেওয়ার ইচ্ছা আমাদের ছিল না, বরং আমরা এই ছবির মাধ্যমে ডিমা হাসাওয়ের সৌন্দর্য, স্থানীয় ভাষা, রীতিনীতির প্রতি সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছিলাম মাত্র। তবুও কাউকে কোনও ক্ষেত্রে আঘাত দিয়ে থাকলে আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’’