কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল, সিপিএম, ডিএমকে-র পরে কংগ্রেসও ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর প্রস্তাবের বিরোধিতা করল। লোকসভা ভোট ও রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করার প্রস্তাব ‘অগণতান্ত্রিক’ ও ‘সংবিধানের মূল কাঠামোর বিরোধী’ বলে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন।
মোদী সরকার ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে কোবিন্দ কমিটি তৈরি করেছিল। কমিটি সব রাজনৈতিক দলের কাছেই মতামত জানতে চেয়েছিল। খড়্গে দাবি তুলেছেন, গণতন্ত্র বাঁচাতে এক দেশ, এক ভোটের ভাবনা আবর্জনার ঝুড়িতে ফেলে দিয়ে, এই কমিটিই তুলে দেওয়া হোক।
বিরোধীদের মতে, বিজেপি নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করিয়ে, কেন্দ্রের পাশাপাশি সব রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। আর কংগ্রেস সভাপতি তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, যে কোনও সাধারণ ভোটার বুঝতে পারবেন এই আলোচনা, মতামত নেওয়া আসলে ভান করা। ইতিমধ্যেই মনস্থির হয়ে গিয়েছে। খড়্গে কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে কোবিন্দকে আবেদন জানিয়েছেন, তিনি যেন কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পদ ও গরিমার অপব্যবহার করতে না দেন। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী এই কমিটিতে থাকতে রাজি হননি। খড়্গের অভিযোগ, কমিটিতে বিরোধী শিবিরের প্রতিনিধিত্ব নেই।
লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা ভোট করানোর পিছনে মোদী সরকারের প্রধান যুক্তি ছিল, এতে অর্থ সাশ্রয় হবে। বারবার নির্বাচনের জন্য যে সরকারি কাজ আটকে থাকে, তা হবে না। খড়্গে তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধির জন্য চালু প্রকল্পের কাজ আটকে থাকে না। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আয়োজনে ৩৮৭০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। পাঁচ বছর অন্তর
লোকসভা নির্বাচন করাতে পাঁচ বছরের বাজেটের মাত্র ০.০২ শতাংশ খরচ হয়। বিধানসভা নির্বাচনের খরচ রাজ্য বহন করে। সেখানেও একই রকম খরচ হয়। গণতন্ত্রের রক্ষায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে মানুষ এটুকু মেনে নেবেন। লোকসভা ভোটের সঙ্গে বিধানসভা ভোট করাতে হলে কিছু রাজ্যের বিধানসভা মেয়াদ ফুরোনোর আগেই ভেঙে দিতে হবে। কিছু রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে হবে। খড়্গের বক্তব্য, জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া কেন্দ্রের হাতে কোনও বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা নেই।