সেনায় নিয়োগে প্রার্থীদের জানাতে হচ্ছে জাতির নাম! গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুললেন আম আদমি পার্টি (আপ) সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে তিনি দাবি করছেন, ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম বার সেনায় নিয়োগে প্রার্থীদের জাতির নাম উল্লেখ করতে হচ্ছে!
আপ নেতা সঞ্জয় টুইট করেছেন, ‘মোদী সরকারের নিন্দাজনক চেহারা দেশের সামনে এসে গিয়েছে। মোদীজি কি দলিত, ওবিসি এবং আদিবাসীদের সেনায় নিয়োগে উপযুক্ত মনে করেন না? ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম সেনায় নিয়োগে প্রার্থীদের জাতির নাম বলতে হচ্ছে। মোদীজি, আপনি অগ্নিবীর তৈরি করতে চাইছেন, না জাতিবীর?’
তৃণমূল ও কংগ্রেস এই বিষয়ে তোপ দেগেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলের সেনায় যোগ দেওয়ার অধিকার আছে। এটা যদি সত্যিই মোদী সরকারের উদ্দেশ্য হয়, তাহলে তা দেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক সঙ্কেত।’’ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘জাতিভিত্তিক সেনাবাহিনী তৈরির চেষ্টা করছে মোদী সরকার। সঞ্জয় একদম ঠিক কথা বলেছেন। অগ্নিপথ নিয়ে আগেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে, এ বার আরও বড় বিতর্ক তৈরি হল। এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক প্রবণতা। এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে বিজেপি।’’
সঞ্জয়ের অভিযোগের জবাব দিয়েছে বিজেপি। দলীয় মুখপাত্র নলিন কোহলী বলেন, ‘‘বিরোধিতা করা যেন বিরোধীদের স্বভাব হয়ে গিয়েছে। মোদী বিরোধিতায় এই মডেল আর কত দিন চলবে?’’ বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি শাখার প্রধান অমিত মালবীয় টুইট করে দাবি করেছেন, নতুন কিছুই করা হয়নি। এত দিন যে ভাবে সেনায় নিয়োগ হয়ে এসেছে, সে ভাবেই এ বারও নিয়োগ হচ্ছে। বিরোধীদের স্বভাব হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপর প্রশ্ন তোলা।
তবে শুধু সঞ্জয়ই নয়, বিহারের জেডিইউ নেতা তথা ওই দলের সংসদীয় বোর্ডের জাতীয় সভাপতি উপেন্দ্র কুশবাহাও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে টুইটের মাধ্যমে প্রশ্ন করেছিলেন, সেনায় নিয়োগে সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। তা হলে অগ্নিবীরদের জাতি কেন জানাতে বলা হচ্ছে?
এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, অগ্নিবীরদের নিয়োগে নতুন কোনও পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে না। এত দিন যে ভাবে সেনায় নিয়োগ প্রক্রিয়া চলত, এ বারও তা-ই হচ্ছে।