অতিশী মারলেনা। —ফাইল চিত্র
অনশনের চার দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন দিল্লির মন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি (আপ)-র নেত্রী অতিশী মারলেনা। সোমবার গভীর রাতে তাঁকে দিল্লির লোকনায়ক জয়প্রকাশ (এলএনজেপি) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আপের দাবি, সোমবার মধ্যরাতে অতিশীর রক্তে শর্করার পরিমাণ (ব্লাড সুগার লেভেল) ৪৩ হয়ে যায়। ভোর ৩টে নাগাদ তা আরও কমে ৩৬ হয়। আপ নেতা তথা দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে ব্লাড সুগার মাপার যন্ত্রের ছবি দিয়ে অতিশীর শারীরিক পরিস্থিতির কথা জানান।
সোমবার সন্ধ্যায় অতিশীর শারীরিক পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁকে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সুপারিশ করেন। অতিশীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর শরীরে ক্ষতিকারক কিটোনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। তাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন। কিন্তু তাতে রাজি হননি অতিশী। তিনি বলেন, ‘‘২৮ লক্ষ দিল্লিবাসী জল না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব। বিজেপি পরিচালিত হরিয়ানা সরকার গত ৩ সপ্তাহ ধরে দিল্লিকে ১০০ এমজিডি (মিলিয়ন গ্যালন পার ডে) কম জল দিচ্ছে।’’
প্রবল গরমের কারণে দিল্লিতে তীব্র জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি শাসিত প্রতিবেশী রাজ্য হরিয়ানার থেকে বাড়তি জল চেয়েছিল দিল্লি সরকার। মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টেও। তার মধ্যেই অতিশী দিল্লির জলসঙ্কট মেটানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি জানান, যদি ২১ জুনের মধ্যে দিল্লির জলসঙ্কট না মেটে তবে তিনি অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশনে বসবেন। দাবি না মেটায় ‘জল সত্যাগ্রহ’ শুরু করেন তিনি। অভিযোগের সুরে অতিশী জানান, দিল্লি সাধারণত প্রতিদিন ১০০ কোটি ৫০ লক্ষ গ্যালন জল পায়। হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে জল আসে ৬১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে হরিয়ানা সরকার সেই পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ৫১ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন জল ছাড়ছে। যার ফলে প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ জলসঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছেন।
অতিশীর অনশনে বসার সিদ্ধান্তকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছেন দিল্লির আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। তিহাড় জেল থেকে দেওয়া এক বার্তায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শুক্রবার বলেন, ‘‘তৃষ্ণার্তকে জল দেওয়া আমাদের সংস্কৃতি। এই নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’’ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ও এই বিষয়ে অতিশীর পাশে দাঁড়িয়েছে। সোমবারই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডল এবং সাগরিকা ঘোষ অনশনরত অতিশীর সঙ্গে দেখা করেন।