দিল্লির রামলীলা ময়দানের মহার্যালিতে অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি— পিটিআই।
রামলীলা ময়দানে ফিরলেন অরবিন্দ কেজরীওয়াল। যে রামলীলা ময়দান থেকে শুরু হয়েছিল অধুনা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপের প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের রাজনৈতিক যাত্রা। আর ফিরেই কেজরীওয়াল নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ভারতীয় জনতা পার্টিকে। বিশেষ করে মোদীর নাম করে বিঁধলেন অর্ডিন্যান্স নিয়ে।
দিল্লি সরকারের অধীনে কর্মরত আমলাদের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে? এই ইস্যুতে দ্বৈরথে জড়িয়ে পড়েছিল দিল্লির আপ সরকার এবং দিল্লির উপরাজ্যপাল। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, দিল্লি সরকারের আমলাদের নিয়ন্ত্রণের ভার থাকবে দিল্লিরই নির্বাচিত সরকারের হাতে। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই অর্ডিন্যান্স আনে কেন্দ্র। ফলে আমলা নিয়ন্ত্রণের ভার আবার ফিরে আসে কেন্দ্রের হাতে। তা নিয়েই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানাতে থাকে আপ। পাশাপাশি গোটা দেশের অবিজেপি শক্তিগুলির কাছে কেজরীওয়াল দরবার করেন, সংসদে এই অর্ডিন্যান্সের বিরুদ্ধে আপের পাশে দাঁড়ানোর। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তামিলনাড়ুর এমকে স্ট্যালিন-সহ অনেকেই তাঁকে সমর্থন করেছেন। রবিবার ছিল দিল্লিবাসীকে কেজরীওয়ালের সমর্থনের আর্জি জানানোর দিন। স্থান হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল রামলীলা ময়দানকে। সেখানেই লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশ থেকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে একহাত নেন কেজরীওয়াল। তীব্র আক্রমণ শানান মোদীর দিকে। আক্রমণ করেন স্বৈরতান্ত্রিক এবং হিটলারি মনোভাবের বলে।
কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন যে, তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে মানেন না, সেই মনোভাবকে বলা হয় হিটলারি মানসিকতা। মোদীজির কালো অর্ডিন্যান্সে আছে, আমি কোনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখি না, এখন থেকে দিল্লিতে স্বৈরতন্ত্রই চলবে। মোদীজির কাছে এখন আর মানুষ সর্বোচ্চ নয়, লেফটেন্যান্ট গভর্নর সর্বোচ্চ!’’
এখানেই শেষ নয়, প্রধানমন্ত্রীকে আরও আক্রমণ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের সংবিধান বদলে দিয়েছেন। ওরা দিল্লির মানুষকে অপমান করেছেন। গত ৭৫ বছরে দেশ এত উদ্ধত প্রধানমন্ত্রী দেখেনি। যখন সুপ্রিম কোর্ট তার রায় দিল, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলে দিলেন, ও সব মানি না। স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা একেই বলে।’’
প্রসঙ্গত, অন্না হজারের সঙ্গী হিসাবে ২০১১ সালে এই রামলীলা ময়দান থেকেই রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় কেজরীওয়ালের। তার পর বহু লড়াই পেরিয়ে দিল্লির ক্ষমতা দখল করেছেন। দেশের বিজেপি বিরোধী অন্যতম নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিতও করে ফেলেছেন। সেই কেজরীওয়ালই আবার ফিরলেন রামলীলা ময়দানে। তবে এ বার আক্রমণের লক্ষ্য কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।